চরফরাদী গ্রামের_ইতিহাস আজ থেকে প্রায় ৩৯০ (তিন শত নব্বই) বছর আগের কথা। বর্তমান পাকুন্দিয়া সদরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ছিল বিশাল এক নদী। যা আজ ব্রম্মপুত্র নামে পরিচিত। তৎকালীন সময় পাকুন্দিয়া সদরে কিছু মানুষের বসবাস থাকলেও সদরের পশ্চিম এলাকা গুলো নদীর চরে রূপান্তরিত হওয়ার ফলে কোন মানুষের বসবাস ছিলনা।
জানা যায়, সর্ব প্রথম এই চরাঞ্চলে একজন আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তি বসবাস শুরু করেন। কিন্তু এই আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তি কে ছিল কোথায় থেকে এসেছে তা জানা যায়নি। তবে এতটুকু জানা যায় যে, তিনি একজন খোদাভীরু পরহেজগার মানুষ ছিলেন। তাই তাঁকে ফরাদী নামে সম্ভোধন করা হতো। আর “ফরাদী” আল্লাহওয়ালা ব্যক্তি কে বুঝানো হতো। তিনি এখানে এসেই একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই মসজিদ টি হলো বর্তমান চরফরাদী ঠাকুর বাড়ী জামে মসজিদ।এই মসজিদের পূর্বে এই অঞ্চলে কোন মসজিদ তৈরী হয়নি। আর তৎকালীন সময় কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদি প্রাণঘাতক রোগ মহারির আকারে ছড়িয়ে পড়েছিলো। যার ফলে গ্রামকে গ্রাম আক্রান্ত হয়ে মানুষ ব্যাপক হারে মারা যেতে লাগল। যেহেতু ঐ সময় এখনের মত আধুনিক চিকিৎসা ছিলোনা, তাই মানুষ এই ফরাদীকে পেয়ে তার কাছে থেকে জানতে চাইল এই মহামারী থেকে আরোগ্য লাভের উপায় কি হতে পারে.? তখন তিনি আল্লাহর নাম নিয়ে বিভিন্ন দোয়া দুরূদ পাঠ করে একটি বাঁশের পাত্রের ভিতর ফুঁক দিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করে দিলেন। অতপর বললেন যে, এই পাত্রটি মহারির আক্রান্ত এলাকায় নিয়ে পাত্রের মুখ খুলে দাও। ইনশাল্লাহ আল্লাহ তা’য়ালার রহমতে কমে যাবে। এরপর লোকেরা তার কথা মত কাজ করলো এবং আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে যেতে লাগল।
এভাবে ধীরে ধীরে তার নাম চার দিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। একসময় লোকেরা তাদেরকে প্রশ্ন করলো যে, এই চিকিৎসা তোমরা কোথায় পেয়েছো? তারা বললো, চরের ফরাদীর কাছ থেকে। লোক মুখে এই বাক্যটি প্রসিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় একসময় চরের ফরাদী বাক্যটিই চরফরাদী রূপ ধারণ করে। চরফরাদী গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বিদের কাছে থেকে এমনই তথ্য পাওয়া যায়।
সূত্র : চরফরাদী গ্রামের কথা ফেইজবুক পেইজ