
ছদ্মনাম সাদিয়া (১৯) ও মেঘলা (১৮)। দুইজনই পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলায় সিঙ্গাপুর প্রবাসী এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয় সাদিয়ার। বিয়ের তিনদিন পর সেখান থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বিয়ের চার দিনের মাথায় ১৪ ফেব্রুয়ারি তার সমকামী সম্পর্কের বান্ধবী মেঘলার সাথে পালিয়ে যায়।
কোথাও খুঁজে না পেয়ে সাদিয়ার মা রেখা আক্তার (ছদ্মনাম) বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন কৌশলী হয়ে নিখোঁজের ৪ দিন পর গত মঙ্গলবার বিকেলে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা মহিপুর থানা এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করে।
সাদিয়া আক্তার (ছদ্মনাম) পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের সন্তান এবং বুরুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। । তার সমকামী বান্ধবী মেঘলা (ছদ্মনাম) একই ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং মান্দারবান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত সাদিয়া ও মেঘলার মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। গত এক সপ্তাহ আগে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার সাগরদী গ্রামের এক বাসিন্দার সাথে সাদিয়ার বিয়ে হয়।
বিয়ের তিন দিনের মাথায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে সে। ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিয়ে আসেনি। ঘটনার দুই দিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি তার মা বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ মোবাইল ফোনের আইএমই নাম্বার ট্র্যাক করে তাদের লোকেশন পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানা এলাকায় শনাক্ত করে।
পরে পাকুন্দিয়া আহুতিয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইউসুফ আলীর নেতৃত্বে এসআই আশিস কুমার দাস, কনষ্টেবল সানোয়ার, মহিলা কনস্টেবল কাকলী সহএকদল পুলিশ কুয়াকাটা এলাকায় যায়। সেখানে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে। প্রথমে সাদিয়ার বান্ধবী মেঘলাকে আটক করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন কৌশল অবলমন করে সাদিয়াকেও উদ্ধার করতে সামর্থ হয় পুলিশ।
পাকুন্দিয়ার আহুতিয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই ইউসুফ আলী জানান, আমাদের টিম কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কেউ বাদাম বিক্রি করে, কেউ রিক্সাওয়ালা সেজে, কেউ ভ্যানচালক সেজে তাদেরকে আটক করতে সামর্থ্য হই। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দীর্ঘদিন যাবত সমকামিতায় লিপ্ত থাকার কথা জানান ও দুজন-দুজনকে ভালবাসার কথা জানান এবং তারা একত্রে সংসার করার আশা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, সমকামিতা বড় ধরনের অন্যায় এই কথা বুঝিয়ে বলার পর তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারে এবং এ ধরনের অপরাধ আর করবে না বলে মুচলেখা দেয়। পরে তার স্বামী, বোন জামাই, এবং চাচাতো ভাইয়ের হাতে তাদের তুলে দেওয়া হয়।