
ক্রীড়াঙ্গনে নিজের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে পল্লী অঞ্চলের মেধাবী কিশোরী শাহিনুর। প্রতিভা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করেছে দেশসেরা হওয়ার গৌরব। তার অসাধারণ নৈপুণ্যের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমির দূত হিসেবেও মনোনীত হয়েছে।
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই একের পর এক সাফল্যের পালক যুক্ত হচ্ছে তার মুকুটে।এবারো লক্ষ্য একই-সেরাদের মধ্যে সেরা হওয়া।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী গ্রামের মেয়ে শাহিনুর আক্তার। বাবা হাবিবুর রহমান পেশায় একজন কৃষক, আর মা হাফিজা আক্তার গৃহিণী। সে বর্তমানে পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার টানা সাফল্যে গর্বিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সহপাঠী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। শুধু পড়াশোনায় নয়, খেলাধুলাতেও দারুণ মনোযোগী শাহিনুর। প্রতি বছর স্কুল পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অর্জন করে যাচ্ছে একের পর এক পুরস্কার। পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার প্রতিভা নজর কাড়ে সবার। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা, শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন পর্যায়ের খেলাধুলায় অংশ নিয়ে সে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা হওয়ার পর জাতীয় পর্যায়ে জায়গা করে নেয়। ২০২৩ সালে রানার্সআপ হওয়ার পর ২০২৪ সালে সে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এর স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি তাকে তিন বছরের জন্য দূত হিসেবে মনোনীত করে। এ বছরও তার দাপট অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বালিকা বড় গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ময়মনসিংহ উপ-অঞ্চল পর্যায়ে ১০০ মিটার দৌড়, ত্রি-লাফ ও দীর্ঘলাফে প্রথম হয়ে নিজের অবস্থান আরো শক্তিশালী করেছে। এখন সে ময়মনসিংহ অঞ্চল ও জাতীয় পর্যায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শাহিনুরের মা হাফিজা আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই মেয়ের খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা ছিল। আমি নিজেও খেলাধুলায় ভালো ছিলাম, কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে এগোতে পারিনি। তাই মেয়ের স্বপ্নপূরণে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি, একদিন সে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।’
পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফছর উদ্দিন আহম্মদ মানিক বলেন, ‘শাহিনুরের প্রতিভা আমাদের সবার নজর কেড়েছে। তার উন্নতির জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং তার পড়াশোনাতেও সর্বাত্মক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘শাহিনুরের এই সাফল্যে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। সে যেন ভবিষ্যতে দেশের একজন সফল ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠে, সেজন্য আমাদের শুভকামনা রইল।’
-নয়া দিগন্ত অনলাইন