
সুলতান আফজাল আইয়ূবী
“ও চাঁদ, সামলে রেখো জোছনাকে
কারও নজর লাগতে পারে
মেঘেদের ওড়ো চিঠি উড়েও তো আসতে পারে।”
ও চাঁদ, সামলে রেখো জোছনাকে”
চাঁদ হচ্ছে মহাবিশ্বে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। তাই মন খারাপের রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে রাত কাটিয়ে দেওয়ার মত মানুষও আছে। চাঁদ এক এক প্রজন্মের নিকট এর পরিচয় এক এক রকম। ছোটবেলায় চাঁদকে সূতো কাটা বুড়ীর ছোট্ট ঘর হিসেবে কল্পনা করে বাচ্চারা। কখনও কখনও একে উপমা হিসেবে ব্যবহার করেন বিভিন্ন বয়সের রোমান্টিক লোকজন।
চাঁদের মাঝে কোন বেঈমানী নেই, সে চলে যায় আবার ফিরে আসে। চাঁদের বিশালতা মানুষের মাঝেও আছে, চাঁদ এক জীবনে বারবার ফিরে আসে । ঠিক তেমন মানুষ প্রিয় বা অপ্রিয় যেই হোক, একবার চলে গেলে আবার ফিরে আসে । এ কথাটি হুমায়ূন আহাম্মেদের।
চাঁদ নিয়ে অসংখ্য গান কবিতা লেখা হয়েছে এ পর্যন্ত। যেগুলো হৃদয় ছোঁয়া। এ সমস্ত গানশুনে, চাঁদ দেখে দেখে একটা মন খারাপের রাত অতিবাহিত করা সম্ভব অনায়াসেই ।
যেমন…
“ও আকাশ প্রদীপ জ্বেলোনা, ও বাতাস আঁখি মেলো না, আমার প্রিয়া লজ্জা পেতে পারে……………”।।
.“আকাশের ওই মিটিমিটি তারার সাথে কইবো কথা, নাই বা তুমি এলে,তোমার স্মৃতির পরশভরা অশ্রু নিয়ে গাঁথবো মালা, নাইবা তুমি এলে”।
“ঐ চাঁদের আলো আর লাগেনা ভালো, কেন জানিনা,তুমি ছাড়া এই সুন্দর পৃথিবী মানিনা”
“চাঁদের আলোয় বাধ ভেঙ্গেছে , উছলে পরে আলো”
“এত আলো নিয়ে চাঁদ একলা
এত রং নিয়ে মুখ মেঘলা
কে যেন অন্ধকারে থাকে
শিরীষপাতার ফাঁকে ফাঁকে ও চাঁদ বলে ডাকে…’
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের কবিতার একটি লাইন ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। আসলে বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ বাঙালীরা ক্ষুধার সাথে খুব পরিচিত, হয়তো তারা পূর্ণিমা চাঁদকে ঝলসানো রুটি মনে করে তার দিকে তাকিয়ে থাকতো। কিন্তু বর্তমানে বাঙালীদের পেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। এখন দেশ উন্নয়নের দিকে। কিন্তু আজ ও হাজার হাজার বাঙালীর সন্তান যারা বস্তির অধিবাসী, টোকায়, দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগার করতে পারে না- তাদের কাছে ঝলসানো রুটিকে আকাশের পূর্ণিমা চাঁদের মতোই আরাধ্য লাগে।
যাক, অনাদিকাল থেকে মানুষ মন খারাপ হলে ঘরের জানালায় বসে বসে চাঁদ দেখে মনের দুঃখ দূর করে।
আসলেই কি তাই? প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার এ সময়ে মানুষ চাঁদের খবর কি আর রাখে?
ম্যানেজিং ইডিটর
পাকুন্দিয়া প্রতিদিন
