আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুরে রাজনীতির মাঠ বেশ সরগরম। চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীতা ঘোষণা করে ইতোমধ্যে এলাকায় আগাম তৎপরতা চালাচ্ছেন মো. আউরঙ্গজেব। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এগারসিন্দুরের জনগণের মাঝে ক্লিন ইমেজের অধিকারী মো. আউরঙ্গজেব ১৯৬৮ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনিয়নের আঙ্গিয়াদী গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা একাত্তরের রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা সানোয়ার আলী। তিনি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট হাই স্কুল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজ থেকে কৃতীত্বের সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯৩ সালে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন।
ছাত্রজীবন থেকেই আউরঙ্গজেব বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন। তিনি ১৯৮৪ – ১৯৮৬ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক ও ১৯৮৬-১৯৮৭ সালে ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং ডাকসু হল সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৮-১৯৯০ সালে ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন এবং ৯০ এ গণ আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন শেষে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন।
সংস্কৃতিবান ও ক্রীড়ামোদী আউরঙ্গজেব ঢাকাস্থ পাকুন্দিয়া সমিতি ও ঢাকাস্থ পাকুন্দিয়া ছাত্র কল্যাণ সমিতিসহ অসংখ্য সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনে যুক্ত রয়েছেন।
মো. আউরঙ্গজেবের আসন্ন এগারসিন্দুর ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীতা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের মধ্যে এগারসিন্দুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, আউরঙ্গজেব একজন উচ্চশিক্ষিত মার্জিত ভদ্রলোক। তিনি আওয়ামী পরিবারের সন্তান, নিজে একজন বঙ্গবন্ধু আদর্শের লড়াকু সৈনিক। তাঁর মতো মানুষ আমাদের এলাকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তা এলাকাবাসী এবং দলের জন্য একটি উত্তম প্রাপ্তি হবে। আমরা ইউনিয়ন যুবলীগের পক্ষ থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আউরঙ্গজেবের জন্য নৌকার মনোনয়ন ও দোয়া প্রত্যাশা করছি।
এপ্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, ইউপি নির্বাচনে আউরঙ্গজেবের মতো উচ্চশিক্ষিত, নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবককে আমাদের চেয়ারম্যান হিসেবে খুবই প্রয়োজন। এমন শিক্ষিত লোকজন স্থানীয় রাজনীতিতে আসে না বলেই স্থানীয় সরকারের এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো অযোগ্য লোকেদের জায়গা হয়। আমরা ইউনিয়নের সামজিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে আউরঙ্গজেবকে চেয়ারম্যান হিসেবে চাই। আওয়ামীলীগ তাঁকে তাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করুক।
যুবলীগ নেতা মাহবুবুল হাসান বিপুল বলেন, আউরঙ্গজেব বঙ্গবন্ধু আদর্শের একজন নিরলস কর্মী। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের রাজপথের সৈনিক। টানা ৩ বার ক্ষমতায় থাকার পরও আমরা এগারন্দিুরে আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান পাইনি। এবার একজন আওয়ামী সৈনিক এসেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর নমিনেশনের জন্য আবেদন জানাচ্ছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারার সঙ্গে এগারন্দিুরকে যুক্ত করতে এগারসিন্দুর ইউপি নির্বাচনে নৌকার মাঝি হিসেবে আউরঙ্গজেবকে চাই।
সমাজসেবক এমজেড হায়দার বাবলু বলেন, আউরঙ্গজেব একজন রুচিবান মার্জিত ক্রীড়ামোদী মানুষ। তিনি এগারসিন্দুরে চেয়ারম্যান পদের জন্য সুযোগ্য একজন মানুষ। তিনি চেয়ারম্যান হলে সাধারণ মানুষের জন্য খুবই স্বস্তির হবে।

ছবি : মো. আউরঙ্গজেব
এ প্রসঙ্গে মো. আউরঙ্গজেব বলেন, ১৯৭১ সালে আমার পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মাতৃভূমি রক্ষার জন্য পাকিস্তান সেনা বাহিনী থেকে পলায়ন করে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নেন। বিজয়ী হয়ে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ঘরে ফিরেন। বাবার মুখ থেকে বঙ্গবন্ধু এভং মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে শুনতে শিশু বয়স থেকেই আওয়ামী আদর্শ লালন করি। ছাত্রজীবন কর্মজীবনে সক্রিয় ভাবেই আওয়ামী পরিবারের সাথে রয়েছি। এখন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এগারসিন্দুরবাসীর সেবা করতে চাই। রাজনীতি থেকে আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। নিবেদিতপ্রাণ একজন কর্মী হিসেবে সব সময়ই দলের জন্য কাজ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্রলীগ করার সুবাদে ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর বাড়িতে প্রায়ই যাওয়া হতো। তৎকালে আমার সাংগঠনিক কাজে খুশি হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজে আমাকে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সভাপতি করেছিলেন। এবারও আশাকরি বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাকে এগারন্দিুরে নৌকার মনোনয়ন দেবেন।