
আবদুর রব খোকন
বেশ্যালয়ে আগুন লাগলে লাগোয়া ধর্মীয় স্থানও অল্প হলেও পুড়ে। করোনা হল আগুন, অসচেতনরা বাহক হলেও অল্প সচেতনরাও মরবে। করোনা’র সংক্রমণ হলো ঝড়ের মতো। ঝড় আসলে বাতাস সব গাছেই লাগে, দূর্বল গাছগুলো ভেঙে যায় আর সবল গাছগুলো রয়ে যায়। করোনা’র সংক্রমণ থেকেও একেবারে রক্ষা পাওয়া যাবেনা যেহেতু ঝড় শুরু হয়েই গেছে।
কোন মেডিসিন আসবে? কবে আসবে? না কি আসবেই না- আমরা জানি না। আসলে বিপর্যয়ে আমাদের কোন মা-বাপ নেই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের ভাল তারাই বেঁচে থাকবে। একটাই কথা বার বার শুনছি- ইম্যুউনিটি বাড়াও, ইম্যিউনিটি বাড়াও। হ্যাঁ, এটা খুব প্রয়োজন, কারণ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ালে যেকোন রোগ থেকে দূরে থাকা যায়; আসলে রোগকে নিজে থেকে দূরে রাখা যায়। কিভাবে বাড়ানো যায় এই ইম্যুউনিটি?
১। পর্যাপ্ত পানি পানঃ একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন তিন থেকে সারে তিন লিটার পানি পান করা দরকার। করোনাকালে তিনবার হালকা গরম পানি খান; পারলে গরম মশলা দিয়ে ফুটানো, জিহ্বায় সহ্য হওয়া গরম পানি। তিনবার লবন পানি দিয়ে গড়গড়া করুন।
২। চা-কফি পানঃ আদা চা, লেবু চা র চা; পারলে আদা, গুল মরিচ, লং, এলাচ দিয়ে চা করে খাবেন। অবশ্যই ঘরে তৈরি চা।
৩। প্রতিদিন ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যেমন: আমলকি, পেয়ারা, জাম্বুরা, আঙ্গুর, কমলা, লেবু, মাল্টা, কাঁচা মরিচ, শাক-সবজি খাদ্য তালিকায় রাখুন। সঠিকভাবে খাওয়া হচ্ছে না মনে হলে প্রতিদিন ১টি ভিটামিন সি ট্যাবেট চুষে খান।
৪। অন্যান্য ভিটামিনঃ খাবার প্রপারলী ম্যানেজ করতে না পারলে প্রতিদিন ১টি করে মাল্টিভিটামিন খান।
৫। প্রতিদিন কাজু বাদাম, চিনা বাদাম, মিষ্টি কুমরা, মসুরের ডাল, ছোলার ডাল ইত্যাদির যেকোন একটি জিংক সমৃদ্ধ এসব খাবার খান। বা ১টি করে জিংক ট্যাবলেট খান। মাল্টিভিটামিনে কি কি আছে দেখতে হবে। জিঙ্ক থাকলে আলাদা জিঙ্ক খাওয়া লাগবে না। ভিটামিন বি কম্প্লেক্স থাকলে আলাদা ” বি+ জিঙ্ক” খেতে হবে না।
৬। প্রোটিনঃ প্রতিবেলার খাদ্যে ডিম, দুধ, ডাল, মাছ, মাংস ইত্যাদির ন্যূনতম একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ এসব খাবার খান।
৭। সরিষার তেল, কালোজিরা, মেথি প্রাকৃতিক ঔষধ। নিয়মিত না হলেও দু-একদিন পরপর হলেও খাওয়া উচিত।
৮। মধুঃ বহু রোগের প্রাকৃতিক মেডিসিন। প্রতিদিন সকালে খেলে সুস্থ মনে হবে সারাদিন।
৯। পাকা কলাঃ শরীর সুস্থ রাখতে, পেট ভাল রাখতে পাকা কলা ও কাঁচা পেপের বিকল্প নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় আমাদের স্টুডেন্ট মেডিক্যাল গাইড প্রায়ই বলতেন ” প্রতিদিন সকালে একটি ডিম ও একটি পাকা কলা তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক।
কোনভাবেই ঠান্ডা লাগতে দেয়া যাবে না। ঠান্ডা লাগা মানে করোনা বৃষ্টিতে ঘরের চাল ফুটো হওয়া; ভিজার সম্ভাবনা বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা হলো সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহের পাশাপাশি আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সকলের সুস্বাস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।কেটে যাক এই ভয়াবহ মহামারী।
সহকারী অধ্যাপক
আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ময়মনসিংহ।