গোলাপ আমিন
বিশ্বকাপের উন্মাদনায় একাধারে রাতদিন ২৪ ঘন্টা অবিরতভাবে (আমাদের) বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টানিয়ে রাখা কতোটা আইনসিদ্ধ?
তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তো সূর্য উদয়ের সাথে সাথে উড্ডয়ন করার কথা, আবার সূর্যাস্তের সাথে সাথে নামিয়ে ফেলার কথা।
আমার প্রশ্ন- এটি কি কোনোভাবে মানা হচ্ছে? একাধারে টানিয়ে রাখাতে এটি কি চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে না? এতে স্পষ্ট বুঝা যায়, আমাদের বাংলাদেশের পতাকা সম্মানিত হচ্ছে না বরং উল্টো আরও অসম্মানিত হচ্ছে।
মোদ্দা কথা, এটা আমাদের জাতীয় পতাকাকে বাঁশ দেওয়ার শামিল।
হুজুগে এসব করছে বলে কেউ বিষয়টিকে হয়তো তেমন নজরে আনছে না বা পাত্তা দিচ্ছে না কিন্তু
অন্য কোনো ঘটনাক্রমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি এককভাবে এভাবে জাতীয় পতাকাকে অপমান-অপদস্ত করতো, তাহলে তার কী শাস্তি হতো বা দশা হতো? নিশ্চয়ই বিচারের আওতায় আনা হতো।
আমি মনে করি, এক তো অন্য দেশের পতাকা নিয়ে উন্মাদনা, তার মধ্যে আবার আমাদের পতাকাকে অবমাননার এমন নজির আর কখনও দেখিনি।
শাস্ত্রে একটি কথা আছে- আপনি আচরি পরকে শেখাও ধর্ম।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টানানোর কোনো নির্দেশনা, আইন বা নিয়ম-কানুন থেকে থাকলে যারা এসব নিয়ম-কানুন মানছে না, তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য বা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে আকুল আহ্বান জানাচ্ছি।
…
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু জানি, বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা সংশোধন ২০২১ অনুযায়ী পতাকা আইন অমান্যকারীদের জন্যে ২ বছর কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে।
ছোট্ট একটি গল্পের অবতারণা করে লেখাটি শেষ করতে চাই,
কোনো একজন বিদেশিনীকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে এক লোক। ইদানীং বাংলাদেশের যত্রতত্র বিদেশি ললনারা যেমন বাংলাদেশের ছেলেদের প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে তাদের বুকের জমিনে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তেমন আর কী। তো ছেলেটি ছিল গ্রামের। আমরা সবাই জানি, গ্রামে বউ দেখানোর একটি চল (রীতি) আছে। ছেলেটি সদ্য বিবাহিত নববধূ ‘ওগো বিদেশিনী’কে নিয়ে গ্রামে ঘুরতে বের হয়েছে। ছেলেটি হঠাৎ দেখতে পেল তার এক চাচা তাদের দিকেই আসতেছে। মেয়েটির পোশাক-আশাকের ছিরি বেশি ভালো ছিল না। বিদেশি মেয়েদের ‘দরিদ্র মার্কা ছিন্নবস্ত্র’ পোশাক-আশাকের অবস্থা যা হয় আর কী! একদিকে টান দিলে আরেকদিকে উদাম। আবার মাথায় ঘোমটা-টোমটা ছিল না। তার অবস্থাও সেইরকম। সে গায়ে একটি স্কার্ট পরিধান করেছিল।
যাই হোক, ছেলেটির চাচা তাদের নিকটবর্তী হওয়ার আগে আগে মেয়েটির কানে কানে বলল- ওই যে লোকটা আসতেছে সে তোমার চাচা-শ্বশুর। মাথায় ঘোমটা দিয়ে তাকে সম্মান জানাও।
সে তৎক্ষণাৎ করলো কি স্কার্টটা টেনে তুলে মাথায় ঘোমটা দিয়ে চাচা-শ্বশুরকে সম্মান জানালো। আর এতে অন্যদিকে আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটলো কি মেয়েটির নিম্নাংশের সদর দরজা খোলা পড়ে রইল। সেদিকে তার ভ্রুক্ষেপ নেই। চাচা-শ্বশুরকে সে যথার্থ সম্মান জানাতে তো পেরেছে বটে।
হায়! কী চমৎকার দেখা গেল।
আমাদের সর্বস্ব উজার করে দিয়ে আমরা যে দিগম্বর হয়ে বসে আছি, সেদিকে কোনোই নজর নেই।
এমন দশাটি-ই চারপাশে দেখতে পাচ্ছি আমরা আজ।
২০.১১.২০২২