বিশেষ প্রতিবেদন : অনাবৃষ্টি আর অব্যাহত খরায় চলতি মৌসুমে আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাকুন্দিয়াসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের চাষিরা। টানা তাপপ্রবাহে ক্ষেতে লাগানো ধানের চারা পুড়ে যাচ্ছে। অনেক চারা হলুদ রং ধারণ করেছে।
কৃষকরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতেই তীব্র খরায় আমনের বীজতলা পুড়ে গেছে। আমন চাষের ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এখনো অনাবাদি পড়ে আছে অনেক জমি। এ অবস্থায় আমন চাষ নিয়ে তারা বিপাকে রয়েছেন।
সরেজমিন পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ও বুরুদিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন জমিতে গিয়ে দেখা যায়, শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক পাম্প দিয়ে জমিতে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণ করার জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। আবার অস্বাভাবিক লোডশোডিং এর কারণে শ্যালো মেশিনেই ভরসা করতে হচ্ছে
এদিকে জ্বালানী ও সারের দামও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকরা পড়ছেন বিপাকে। নাজিমুদ্দিন নামের একজন কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চাষাবাদ করে আর সংসার চালানো যাবে না। যেভাবে ডিজেল, রাসায়নিক সারের দাম বাড়ছে তাতে কৃষিকাজ করে লাভবান হওয়া সম্ভব হবে না।’
কৃষক আল আমিন জানান, পাটুয়াভাঙ্গার নলা বিলের জমিতে এ সময় অনেকে আমন ধানের চাষ করেন। বর্ষা ভরা মৌসুমে বিলসহ পার্শ্ববর্তী জমিতে পানি থৈ থৈ করতো। তবে এবারে বিলে পানি জমেনি। মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এবারে বিলের নিচু জমিতে ধানচাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন। তবে শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে ধানের আবাদ করতে অনেক খরচ হচ্ছে। অতিমাত্রার খরচ করে ধানের আবাদ করে লোকশান হবে।
বুরুদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আবেদ আলী বলেন, ‘এবার আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে ধানের জমির মাটি নরম করা হচ্ছে। আগে ৮০ টাকা লিটার ডিজেল কিনে সেচ দেওয়ার কাজ চলছিল। এখন ১১৪ টাকা দিয়ে কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রাসায়নিক সারের দাম হু হু করে বাড়ছে। এভাবে সরকার একের পর এক জিনিসের দাম বাড়াতে থাকলে মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।
কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টির দেখা মিলছে না। অনাবৃষ্টি আর তীব্র খরায় ফসল চাষে ব্যাঘাত ঘটছে। আমন চাষে প্রতিটি সেচ বাবদ ৩০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। কৃষকরা সেচ পাম্পের মালিকের সঙ্গে মৌসুম চুক্তি করেও সেচ দিচ্ছেন। এতে এক বিঘা জমিতে ধানচাষ করতে এ বছর ৭-৮ হাজার টাকা অতিরিক্ত সেচ খরচ গুনতে হবে।
এ বছর চার বিঘা জমিতে ধানচাষ করেছেন কৃষক ইসমাইল মোল্লা। বৃষ্টি না হওয়ায় একদিন পরপর জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এতে এবার সেচ খরচ বেশি পড়বে বলে জানান তিনি।
পাপ্র/সুআআ