বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
হোসেন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিহাস
/ ২৪৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২, ৭:৪৮ অপরাহ্ণ
A.K.M Zakir Hossain
হোসেন্দী উচ্চ বিদ্যালয় এর ইতিহাস

১ম পর্ব

কোন এলাকার বা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস লিখতে গেলে নিজেকে সেই সময়ে কল্পনা করতে হয়। আর নিজেকে সেই সময়ে নিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন ব্যপার। হোসেন্দী গ্রামের আজকের যে অবস্থা সেই অবস্থা এক সময় ছিল না। কথিত আছে হযরত শাহ জালাল (র) এর ৩৬০ জন সহচরের একজন এসেছিলেন বর্তমান হোসেন্দীতে। শাহ হোসাইন (র) এর নামানুসেই হোসেন্দীর নামকরণ করা হয়। এটাই অধিকাংশের মতামত। অশিক্ষা, কুসংস্কারে নিমজ্জিত ছিল হোসেন্দী গ্রাম। সেই হোসেন্দী কে আলোকিত করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন কিছু আলোকিত, মহৎ প্রাণের মানুষ। হোসেন্দী তে প্রথম বোর্ড স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এ স্কুল কত সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা যায় নি। মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের মিরালী মাস্টার ছিলেন উক্ত বোর্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আর সহকারী শিক্ষক ছিলেন সীতানাথ সেন, ভগবান চন্দ্র সেন, মিসিন মাস্টার ও হোসেন্দী চরপাড়ার আবদুল হামিদ সাহেব। সীতানাথ বাবু ছিলেন বিদ্যালয়টির প্রাক্তন প্রবীণ শিক্ষক পবিত্র রঞ্জন সেনের দাদার ভাই। সীতানাথ সেন তার বাংলা ঘরে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতেন।

বর্তমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনেই ছিল বোর্ড স্কুল। উক্ত বোর্ড স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হত। হোসেন্দী দড়িপাড়ার শ্রদ্ধেয় গোলাম আসফিয়া স্যার। তিনি খুবই উদার ও বৃহৎ মনের মানুষ ছিলেন। তিনি কাজীর চরের একটা স্কুলে পড়াতেন। কিন্তু ওনার মন পড়ে থাকত নিজের হোসেন্দীতে। ওনি মনে প্রাণে চায়তেন একটা বিদ্যাপীঠ হোসেন্দীতে প্রতিষ্ঠা করার। ১৯২৬ সাল, তখন হোসেন্দী স্টেটের নায়েব ছিলেন নৈমুল্লা সরকার। তিনি পঞ্চায়েত প্রধানও ছিলেন। গোলাম আসফিয়া পরামর্শ করলেন নৈমুল্লা সাহেবের সাথে। গ্রামের কয়েকজ মুরব্বি এগিয়ে আসলেন। ওই বছরেই প্রতিষ্ঠা লাভ করল হোসেন্দী শ্যামসুন্দর এম.ই. স্কুল। নৈমুল্লা সাহেবের প্রচেষ্ঠায় কর্তার নিকট হতে জমি সংগ্রহ করা হল। তিনি নিজের বাড়ির একটা টিনের দু’চালা ঘর স্কুলকে দিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি এক খন্ড জমি বিক্রি করে স্কুলের জন্য আসবাব পত্র কিনে দিলেন।

সবচেয়ে গৌরবের কথা হচ্ছে তার দেয়া একটা টেবিল এখনও হোসেন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমান আছে। শ্যামসুন্দর এম.ই. স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন হোসেন্দী দেবত্ব স্টেটের মোহন্ত (যাকে এলাকার লোকজন কর্তা বলে ডাকত)। গোকুল গোবিন্দ্র অধিকারী, মুন্সী নুরুন্নবী ছিলেন সেক্রেটারি। আর সদস্য ছিলেন কুমারপুরের মৌলভী আফতাব উদ্দিন।

এম. ই স্কুলের সম্মানিত শিক্ষক ছিলেন-

১. গোলাম আসফিয়া

২. গোলাম মোস্তফা

৩. মৌলভী শামসুজ্জামান

৪. রোহিনী শীল

৫. সুরুক মিয়া

এম. ই স্কুলটি মাইনর স্কুল ছিল। যেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হত। পরবর্তীতে নারান্দীতেও মাইনর স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন উচ্চ শ্রেণিতে পড়ার কোন সুযোগ ছিল না। একমাত্র কোদালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়া পাকুন্দিয়া থানায় আর কোন হাই স্কুল ছিল না। তবে ১৮০২ সালে প্রতিষ্ঠিত মঙ্গলবাড়িয়া মাদ্রাসাটি (মঙ্গলবাড়িয়া কামিল মাদ্রাসা) ছিল।

(সুত্রঃ হোসেন্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিন স্যার, মিলন মেলা স্মারক-২০০৩)

(চলবে….)

পরবর্তী পর্ব-বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার হোসেন্দী উচ্চ ইংলিশ স্কুলের প্রতষ্ঠা)

  আ.ক.ম. জাকির হোসেন

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা

ইমপালস হাসপাতাল, ঢাকা

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ