সম্প্রতি দুনিয়াব্যাপী চলছে নীরব যুদ্ধ। সে যুদ্ধে আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষ। করোনা নামক মহামারি এই ভাইরাসের প্রকোপে দুনিয়া আক্রান্ত হয়ে কুপোকাত হয়ে আছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে করোনা মোকাবিলায় সাধ্যানুযায়ী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। লড়াই করছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে পুলিশ। তেমনি একজন করোনা যোদ্ধা কিশোরগঞ্জের সন্তান মিজবাহ উদ্দিন আহমদ (নিঝুম)। দেশের ব্যস্ততম নগরী গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে মেডিকেল টেকনোলজিষ্টের দায়িত্বে আছেন তিনি।
জানা গেছে, টেকনোলজিষ্ট মিজবাহ উদ্দিন আহমদ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত ২১ শে এপ্রিল তাকে গাজীপুর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে সাময়িক বদলি করা হয়। সাথের একজন বিভিন্ন অজুহাতে এ কর্মস্থলে না আসলেও সাহস নিয়ে এই কাজে যুক্ত হন মিজবাহ। গাজীপুর সদরে পোস্টিং নিয়ে রোদ ঝড় বৃষ্টিতে না খেয়ে দিন-রাত করোনা আক্রান্ত, মৃত ব্যক্তি ও সন্দেহভাজন মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। গাড়িতে চড়ে ২ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে সাথে নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন পুরো গাজীপুর সদর উপজেলা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৭ দিন ডিউটি করার পর হোটেল বা রিসোর্টে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। অন্যান্য সহকর্মীরা কোয়ারেন্টাইন সুবিধা পেলেও তিনি ভাড়া করা বাড়িতে থেকে দিন-রাত নমুনা সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। এতকিছুর পরও নিজ দায়িত্ববোধ থেকেই পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে তিনি একাই এ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট মিজবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জে ছুটিতে থাকা অবস্থায় ২৫ শে মার্চ পরিবারের কাছে বিদায় নিয়ে করোনা যুদ্ধে অংশগ্রহনের জন্য গাজীপুরে চলে আসি এবং কর্মস্থলে যোগদান করি। তারপর সিভিল সার্জন অফিসে যোগদানের পর থেকেই আজ পর্যন্ত গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে আসছি। রাত ২ টার সময়ও ডাক আসলে মৃতব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করতে বেড়িয়ে পড়তে হয়। কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা না থাকায় এখানে নিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশী। তিনি আরও বলেন, জাতির ক্রান্তিলগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক দাদা আব্দুর রাজ্জাক কোম্পানী ও বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা নিছার আহমদ সবসময় জীবনবাজি ধরেছেন। উনাদের রক্তনহর আমার শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত। তাই প্রজন্ম হিসেবে শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত পিছনে ফিরে তাকাবেন না বলেও জানান করোনা যুদ্ধের সামনের সারির এই যোদ্ধা।