গরমে যেভাবে নিবেন ত্বকের যত্ন
গরম এলেই ত্বকে নানা সমস্যার শুরু হয়। তার ওপর রোদে পোড়া দাগ, কালচে ভাব তো আছেই। ত্বকের পাশাপাশি চুলের ক্ষেত্রেও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অন্যদিকে ত্বকের ধরনেও আবার আছে ভিন্নতা, কারও ত্বক শুষ্ক কারও আবার তৈলাক্ত। তাই গরমের সময়ে ধরন বুঝে যত্ন আবশ্যক যাতে গরমে ঘামে আপনি আপনার ত্বক রাখতে পারেন সুস্থ। কাজেই কীভাবে এ সময়েও ত্বক রাখতে পারবেন লাবণ্যময় আর প্রাণবন্ত সে বিষয়েই জানিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ সাগুফতা ইয়াসমিন।
ত্বকের যত্নে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ক্লিনজিং আর টোনিং। এ ক্ষেত্রে যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের ঘামের কারণে ত্বক আরও বেশি তৈলাক্ত আর মলিন হয়ে পরে। এ ক্ষেত্রে সপ্তাহে তিন দিন দুই চা চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে এক চা চামচ পুদিনা পাতা এক চা চামচ নিম পাতা পেস্ট খানিকটা পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে তা মুখে ব্যবহার করলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব যেমন কমবে তেমনি এ সময়ে রোদে পোড়া দাগ, র্যাশ দূর হবে। এ ছাড়া একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর খোসা পেস্ট সঙ্গে এক টেবিল চামচ মটরের ডালের বেসন নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকে স্ক্রাবের কাজ করবে সঙ্গে তৈলাক্ততাও দূর করবে।
অন্যদিকে যাদের ত্বক শুষ্ক তারা একটি ডিমের কুসুমের সঙ্গে এক চা চামচ শঙ্খ পাউডার আর এক চা চামচ কিউলিন পাউডার মিশ্রণ আকারে পুরো ত্বকে প্যাক আকারে ব্যবহার করলে গরমের এ সময়েও ত্বক থাকবে উজ্জ্বল আর ত্বকে লুকিয়ে থাকা ময়লাও দূর হবে সহজে। এ ক্ষেত্রে এ প্যাকটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ থেকে ত্রিশ মিনিট মুখে পেস্ট আকারে রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ ছাড়া এক টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে হাফ চা চামচ কফি, হাফ চা চামচ ব্রাউন সুগার, কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন সঙ্গে দুই চা চামচ দুধ ভালোভাবে পেস্ট করে তা মুখে দশ থেকে পনেরো মিনিট করে স্ক্রাবের মতো ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিলে এটি এক দিকে যেমন স্ক্রাবের মতো কাজ করবে তেমনি ত্বক পরিষ্কার রাখতেও সহায়তা করবে। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি পায়। ক্লিনজিং-এর পাশাপাশি ত্বকের যত্নে এর পরের ধাপেই আসে টোনার। এ ক্ষেত্রে যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা এক কাপ পুদিনা পাতা, এক কাপ তুলসী পাতা আর এক কাপ নিম পাতা নিয়ে সমপরিমাণ পানি নিয়ে তা জাল করে যখন সবুজ একটি ভাব চলে আসবে তা ঠাণ্ডা করে পরে টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এই টোনারটি ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারবেন কিংবা আইস হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।
অন্যদিকে যাদের ত্বক শুষ্ক তারা দুই কাপ পরিমাণ গোলাপের পাপড়ি নিয়ে তার সঙ্গে এক কাপ পরিমাণ তুলসী পাতা, হাফ কাপ দূর্বা ঘাস নিয়ে তা জাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া চুলের ক্ষেত্রে গরমের এ সময়ে চুল পড়া থেকে শুরু করে স্ক্যাল্পে ঘাম আর খুশকির সমস্যা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন চুল ভালো করে শ্যাম্পু করা আবশ্যক। এক টেবিল চামচ শ্যাম্পুর সঙ্গে এক টেবিল চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ চিনি মিশিয়ে শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল থাকবে ঝরঝরে আর সিল্কি এ সময়ের গরমেও। অন্যদিকে চুলের প্যাক এ সময়ে ব্যবহার সবচেয়ে উপকারী। এ ক্ষেত্রে তিন টেবিল চামচ আমলকী পাউডার, এক টেবিল চামচ মেথি আর দুই টেবিল চামচ শিকাকাই পাউডার ভালো করে মিশিয়ে গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ঠাণ্ডা করে মাথায় মেখে এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিলে ভালো কাজ করে চুলের যত্নের ক্ষেত্রে। এ ছাড়া চুল, ত্বকের পাশাপাশি গরমের এ সময়েও ঠোঁট ফাটার বিষয়টিও অন্যতম একটি সমস্যা। এতে ঠোঁটে কালচে ভাবও চোখে পড়ে। এ ক্ষেত্রে এক চা চামচ গোলাপের পাপড়ি সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস আর কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে রেখে কিছু সময় পরে ঘষে ঘষে উঠিয়ে নিলে ঠোঁটে মরা চামড়া দূর হবে সঙ্গে আপনি পাবেন গোলাপি আভাময় সুন্দর ঠোঁট।
আপনার মতামত লিখুন :
Leave a Reply
More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ