নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
আগামী ২৬, ২৭, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং রোজ বুধবার, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ চরমোনাই’র ফাল্গুনের মাহফিল শুরু হবে। মাহফিলে দেশে-বিদেশের শীর্ষ আলেমরা এবং দেশের বাইরে থেকেও বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করে থাকেন । বিশ্ব ইজতেমার পর এটিই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জনসমাগম হয়। প্রতিবছর মাহফিলের পরিধি বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির তত্বাবধানে এই মাহফিলটি হয়।
সারাদেশ থেকে আগত লাখ লাখ মুসল্লির আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখরিত হবে বরিশালের ঐতিহাসিক কীর্তনখোলার বিশাল ময়দান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জিকিরের সঙ্গে দলে দলে চরমোনাই মুখী মানুষের ঢল শুরু হবে । সবার লক্ষ্য মহান রবের দিদার লাভ।
চরমোনাই ময়দানের ৩ দিনব্যাপী এ দ্বীনি মাহফিলের থাকবে ৭টি বিশেষ বয়ান। ৫টি বয়ান পেশ করবেন হজরত পীর সাহেব মুফতি সৈয়দ মোঃ রেজাউল করীম। আর বাকি ২টি বয়ান পেশ করবেন মুফতি সৈয়দ মোঃ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই।
এ ছাড়া এ মাহফিলে দেশ-বিদেশ থেকে আগত মেহমান, ওলামা-মাশায়েখগণ দ্বীন ও ঈমানি গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করবেন।
চরমোনাই মাহফিলকে কেন্দ্র করে কীর্তণখোলা নদীর তীরে প্রায় ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ও ১০০ একর জায়গাজুড়ে চটের সামিয়ানা টানানো হয়ে থাকে। মাহফিল উপলক্ষে চরমোনাই সহ সন্নিহিত বিশাল এলাকায় ইতোমধ্যে ব্যাপক আয়োজনের কাজ চলছে। বিশাল এলাকায় আগত মুসুল্লীয়ানদের অবস্থান, অজু-গোসল ও জামাতে নামাজ আদায়ের সব এন্তেজাম সম্পন্ন করার কাজ চলছে। চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া আহছানাবাদ মাদ্রাসার ছাএরা ও আগত মুসল্লীরা স্বেচ্ছা শ্রমে মাঠ তৈরির সকল কাজ করে থাকে। সব বিভাগের কাজ হয় নিজস্ব লোকজনের মাধ্যমে।
বিদ্যুৎ সরবরাহে রয়েছে বড় মেগাওয়াট সম্পন্ন বড় কয়েকটি নিজস্ব জেনারেটর। চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া আহছানাবাদ মাদ্রাসায় তৈরি হয় অস্থায়ী হাসপাতাল ও ঔষধ বিভাগ। চরমোনাই অনুসারী ডাক্তারগন স্বেচ্ছায় চিকিৎসা সেবা দেন।
মুসল্লীদের সেবা ও নিরাপত্তার জন্য রয়েছে ২০ হাজারের অধিক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক। নামাজ ও বয়ান চলার সময় সকল দোকানপাট বন্ধ থাকে। বিড়ি সিগারেট সহ বেহুদা সকল জিনিস এবং পঁচা বাঁশি খাবার রাখা ও জিনিসপত্র অতিরিক্ত দামে বিক্রি নিষিদ্ধ। এসব বিষয়গুলো তদারকির জন্য নিজস্ব স্পেশাল গোয়েন্দা টিম নজরদারি করে থাকে। ধরা পড়লে জরিমানা ও দোকান উচ্ছেদ করা হয়। ময়দানের ভিতরে বই বা কোন জিনিসপত্র ফেরি করে বিক্রি নিষিদ্ধ।
বয়ান শুনার জন্য ৫ টি মাঠে ১৫ হাজারের অধিক মাইক লাগানো হবে। চরমোনাই মাহফিলে পানির ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে ও টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। লাইট, মাইক, পানি, টেলিফোন এস বিভাগে আলাদা (L.M.T) স্বেচ্ছাসেবক টিম থাকে। আর্থিক নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকের শাখা খোলা হয়েছে। মুসল্লীগনের মোবাইল নেটওয়ার্ক এর জন্য পাঁচটি অস্থায়ী টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।
পাঁচটি মাঠের স্বেচ্ছাসেবকদের যোগাযোগের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন নিজস্ব ওয়ারলেস নেটওয়ার্কে পাঁচ শতাধিক ওয়াকিটকি ফোন রয়েছে। নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন মুসল্লিদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন । মাহফিলের যাবতীয় সকল খরচ মাহফিলে আগত মুসল্লীগনের সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে।
এ মাহফিলে যোগদানের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সড়ক ও নৌপথে হাজার-হাজার মুরিদানসহ মুসুল্লীবৃন্দ চরমোনাই পৌছান । বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ সড়ক হয়ে নব নির্মিত সাহেবের হাট সেতু অতিক্রম করে মুসল্লীবাহী যানবাহন চরমোনাই পৌছে থাকে।
চরমোনাই মাহফিলে আগত মুসল্লিদের জন্য অজু-গোসল ও জামাতে নামাজ আদায়ের সব ব্যবস্থাও সম্পন্ন করা হয়েছে।