সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
চিন্তার বাগিচায় সুরভিত পুষ্প ফুটুক
/ ১৩৪ Time View
Update : বুধবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৪৭ অপরাহ্ণ

স্বভাবতই আমরা সময়, পরিবেশ, মানুষের আচার-আচরন, কথাবার্তা থেকে নানাভাবে নিজেরা প্রভাবিত হই। সেই প্রভাব ভালকিছুর যেমন হয়, খারাপের প্রভাবও তেমনই আমাদের মাঝে আসে। কখনো কোন দল, মত, ধর্ম বা চিন্তায় আমরা এতোটাই প্রভাবিত হই, আমরা নিজেদেরই ভুলে যাই, এমনকি নিজের চিন্তা-ভাবনাকেও জলাঞ্জলি দেই। ভাবি, হয়তো সেটাই সঠিক। প্রকৃতপক্ষে আমরা সবসময় সঠিক এবং নির্ভুল জিনিসটি বুঝতে পারি না। হয়তো পরিবেশটাই তখন খারপকে প্রাধান্য দেয় বলে তখন সবাই সেটাকেই সঠিক মনে করি।

আমরা বেশিরভাগ সময় নিজেদের ভিতর আসা নানা চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমেই প্রভাবিত হই। তাই নিজেরা যত ভালো চিন্তা-ভাবনা করব ততোই ভালোভাবে গড়ে উঠবো। ইতিবাচক চিন্তার ফলে মানুষ তাঁর নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে। আমারা অন্যের নেতিবাচক গুন, আচার-আচরণ এবং চিন্তাগুলোকেই বেশি দেখি,  সেই সাথে তাদের কে সেই অনুপাতে বিচার করি। তবে প্রশ্ন হল- আমরা অন্যের বিচার করার সেই অধিকারটুকু রাখি?

প্রত্যেক মানুষের মধ্যে অনেক ইতিবাচক এবং কিছু না কিছু ভালো গুন রয়েছে সেগুলোকে খুব কমই আমরা নজর দেই। আমারা কি পারি না- অন্যের ভালো গুনগুলোকে মনে করিয়ে তাঁর প্রশংসা করতে। কারণ মানুষ প্রশংসা পেতে পছন্দ করে, আর মানুষ যদি ভালো কাজের কিংবা ভালো গুনের জন্য যদি কারও প্রশংসা পায়, তাহলে তাঁর ভিতরে আরও ভালো কাজ করার আগ্রহ, ভালো গুন জন্ম নেয়। এতে করে তাঁর চিন্তা- চেতনা, মন-মানসিকতা আরও উন্নত হবে।

দার্শনিক সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছিলেন, “নেতিবাচক লোক ব্লাড ক্যানসারের চেয়েও ভয়াবহ। এটি যেমন ব্যক্তির জন্য সত্য তেমনি সত্য সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্যও। নেতিবাচক চিন্তার অধিকারী ব্যক্তি আপনার মূল্যবোধকে অবমূল্যায়ন করবে, ভাবমূর্তিকে করে দেবে ধ্বংস, আপনাকে উন্মাদের মতো পরিচালিত হতে ইন্ধন যোগাবে, নষ্ট করে দেবে আপনার স্বপ্ন, ভেঙে দেবে সৃজনশীলতাকে, উৎসাহকে করবে বাধাগ্রস্ত, সামর্থকে করে দেবে দুর্বল এবং আপনার মূল্যবান মতামতকে উপহাস করে উড়িয়ে দেবে; এ অবস্থায় আপনার মনোভাবে নেমে আসবে হতাশার কালো মেঘ। সুতরাং সবসময় নেতিবাচক চিন্তার অধিকারী লোক, সে যে-ই হোক না কেন, তার থেকে দূরে থাকুন। নেতিবাচক লোক বা অসৎ লোক সৎ ব্যক্তির কাজের মধ্যে, ইতিবাচক লোকের কাজের মধ্যে কখনো মহৎ উদ্দেশ্য খুঁজে পায় না। সে সব সময় কাজের নেতিবাচক দিক, কাজের অসৎ উদ্দেশ্য ও অসৎ কর্ম দেখতে পায়”।

ইতিবাচক চিন্তা হচ্ছে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আশাহত না হয়েও ঠান্ডা মাথায় পরিবেশকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করে যাওয়া। জীবনকে সুস্থ, সুন্দর করার জন্য ইতিবাচক ভাল চিন্তার কোন বিকল্প নেই।

আসুন ইতিবাচক মন-মানসিকতা তৈয়ারের জন্য কিছু কাজ করি।

১। সময় নিন :- নিজের সাথে খারাপ কিছু ঘটতে থাকলে মোটেও ঘাবড়াবেন না।নিজের সে কষ্টকে গিলে ফেলতে শিখুন। কবি ইমতিয়াজ মাহমুদের মতে “জীবনে যা-ই ঘটুক, বলবেন, ও আচ্ছা”।

২। ইতিবাচক মানুষের সাথে চলাফেরা করুন: এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইতিবাচক চিন্তা, শুদ্ধচিন্তার মানুষের সংস্পর্শ আপনাকে সহজেই বদলে দিবে।
সেইসাথে নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের সঙ্গ পরিহার করুন।

৩। অন্যদের সাহায্য করুন : এতে আপনার হৃদয় ও মন আত্মতৃপ্তি পাবে। যা আপনার ইতিবাচক মনোভাব দৃঢ় করতে সাহায্য করবে।

৪। কৃতজ্ঞ থাকুন: আপনার যা আছে তাই নিয়ে কৃতজ্ঞ হোন। নিজের কাজেই নিজে মুগ্ধ হোন। মনে রাখবেন “মুগ্ধ হবার ক্ষমতা কমে গেলে, মুগ্ধ করার ক্ষমতাও কমে যায়।

৫। ইতিবাচক পড়াশুনো করুন : ভাল বই, কবিতা, ইতিবাচক উক্তি ইত্যাদি আপনাকে পজেটিভ বা ইতিবাচক মানুষ হতে সহায়তা করবে।

৬।ক্ষমা : নিজেকে ও অন্যকে ক্ষমা করতে শিখুন, ক্ষমা একটি মহৎ গুন। ভাল মন্দ জীবনে যাই ঘটুক তা ক্ষমা করে আগামীর ভাল করার চেষ্টায় লিপ্ত হোন।

আমাদের প্রত্যেকের চিন্তা – চেতনা সত্য,নির্মল, সুন্দর ও স্বপ্নিল হোক। আমরা সবাই একই তরনির যাত্রী। নিজেদের মধ্যে হীনমন্যতায় ভুগে একে অপরের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা করা নিজেই নিজের ক্ষতি করা বৈ কিছুই নয়। আসুন আমরা নিজের চিন্তার বাগিচায় সুরভিত পুষ্প ফোটাই। আমরা পজেটিভ হলেই পজেটিভ বাংলাদেশ হবে।

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক
পাকুন্দিয়া প্রতিদিন
nobosur15@gmail.com

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ