সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আলী যাকেরের দিনগুলো
/ ১৬৭ Time View
Update : শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

এক নজরে আলী যাকেরের দিনগুলো

আলী যাকের ছিলেন একজন জনপ্রিয় বাংলাদেশি অভিনেতা, ব্যবসায়ী ও কলামিস্ট। দেশীয় বিজ্ঞাপনশিল্পের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব যাকের টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকে সমান জনপ্রিয় ছিলেন। আলী যাকের বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি-র কর্ণধার ছিলেন। তাঁর সহধর্মিণী সারা যাকেরও একজন অভিনেত্রী।

শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানা পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত করে। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।

আলী যাকের ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। মাহমুদ তাহের ও রেজিয়া তাহেরের চার সন্তানের মধ্যে যাকের ছিলেন তৃতীয়। পিতার সরকারি চাকরির সুবাদে তিনি কুষ্টিয়া ও মাদারীপুরে শৈশব অতিবাহিত করেন।

আলী যাকের ১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীকালে ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হন।

১৯৭২ সালের আলী যাকের আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর কবর নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে। ১৯৭২ সালের জুন মাসের দিকে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। ওই দলে তিনি আতাউর রহমানের নির্দেশনায় বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ওয়াপদা মিলনায়তনে।

১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন বাদল সরকারের বাকি ইতিহাস নাটকে, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর যাত্রা। আলী যাকের ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাভিশনের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অনুষ্ঠান ভালোবাসার বাংলাদেশ উপস্থাপনা করেন।

নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের জন্য বিশ্বখ্যাত বিদেশি নাটকের বাংলা রূপান্তর আর নাটক নির্দেশনা এসব কাজে আলী যাকের ব্যস্ত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ওই দলে যোগ দেন সারা যাকের, যাঁকে শুরুতে চোখেই পড়েনি আলী যাকেরের। একটি নাটকের প্রদর্শনীর আগের দিন একজন অভিনেত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সারা যাকেরকে দেওয়া হয় চরিত্রটিতে অভিনয় করতে। আলী যাকেরের ওপর দায়িত্ব পড়ে চরিত্রটির জন্য তাঁকে তৈরি করার এবং খুব দ্রুত চরিত্রটির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন সারা যাকের। এই প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে যান আলী যাকের। ১৯৭৭ সালের এই ঘটনার রেশ ধরেই আলী যাকের আর সারা যাকেরের বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুই সন্তান, পুত্র অভিনেতা ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রিয়া সর্বজয়া।

আলী যাকের ক্যান্সার ও কোবিড -১৯ এ আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ নভেম্বর সকালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

সূত্র: কালের কন্ঠ

 

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ