বাংলা সাহিত্যের রাজপুত্র হুমায়ূন আহমেদ। আজ ১৩ নভেম্বর জননন্দিত লেখক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকারের শুভ জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে তিনি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামে নানাবাড়িতে জন্ম নেন।
১৯৭২ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে এতটাই নন্দিত হয়েছিল যে এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে।রসবোধ আর অলৌকিকতার মিশেলে বাংলা কথাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর সৃষ্টি হিমু, মিছির আলী, বাকের ভাই চরিত্রগুলো পেয়েছে ‘অমরত্ব। তাঁর লেখা গানগুলো এখনও মানুষের মুখে মুখে।
১৯৮০-১৯৯০ এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ধারাবাহিক এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রচনা শুরু করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে তার প্রথম টিভি কাহিনীচিত্র ‘প্রথম প্রহর’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার শুরু হলে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
নব্বই দশকের মাঝামাঝি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরো মনোযোগ দেন হুমায়ূন আহমেদ।
তাঁর টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘অয়োময়’, ‘আজ রবিবার’, ‘নিমফুল’, ‘তারা তিনজন’ ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম, ‘সবুজ সাথী’, ‘উড়ে যায় বকপঙ্খী’, ‘এই মেঘ এই রৌদ্র’ এখনও ইউটিউবে খুঁবে বেড়ান অনেকেই।
হুমায়ূন আহমেদের চিত্রনাট্য ও পরিচালনার ছবিগুলোর মধ্যে ‘আগুনের পরশমণী’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছে৷ ‘খেলা’, ‘অচিন বৃক্ষ’, ‘খাদক’, ‘একি কাণ্ড’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অন্যভূবন’ এর মত নাটকগুলোর আলোচিত ডায়লগ এখনও অনেকের মুখেই শোনা যায়।
বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি৷ এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদিও স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কারসহ (১৯৮৮) অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক।
জাপান টেলিভিশন ‘এনএইচকে’ হুমায়ূন আহমদকে নিয়ে নির্মাণ করে ১৫ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’।
২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হার মানেন তিনি।পাড়ি জমালেন পরপারের পথে।