স্টাফ রিপোর্টার : ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদ ও সিরাতুন্নবী সা: উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের “বাতিঘর সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ” এর আয়োজনে ১০০০ কপি (বিশ্বনবীর জীবনী গ্রন্থ) সিরাতের বই বিনামূল্যে বিতরণের দ্বিতীয় পর্ব আজ বুধবার (১১ নভেম্বর) আসরের নামাজের পর আজীমুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মুফতী মুহাম্মাদ আলী জামে মসজিদ, কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়।
বাতিঘর সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাথী মাওলানা আবদুল্লাহ আশরাফের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন, জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদের খতীব হযরত মাওলানা শামছুল ইসলাম সাহেব।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্বনবীর জীবনী শীর্ষক বক্তব্য রাখেন , জামিয়া ইমদাদিয়ার প্রধান মুফতি, মাওলানা ওমর আহমাদ সাহেব।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা শামছুল ইসলাম সাহেব সীরাতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীতা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, সিরাত হলো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের আদ্যপ্রান্ত আলোচনা। কীভাবে জন্মেছিলেন? কীভাবে তিনি কথা বলেছেন? মুয়ামালা-মুয়াশারাত করেছেন। মানুষের সঙ্গে কীভাবে মিশেছেন। এ নিয়ে যা আলোচনা হয় তাকে সিরাত বলে।
আর মিলাদ বলা হয়, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কীভাবে জন্মগ্রহণ করছেন সে আলোচনা শুধু। সিরাতের তুলানায় মিলাদুন্নবী সাগরের এক বিন্দু পরিমাণের চেয়ে বেশি নয়। সিরাত নবী সা : এঁর জীবনের মহাসমুদ্র আর মিলাদুন্নবী হচ্ছে, তার ক্ষুদ্র থেকে আরও ক্ষুদ্রতম অংশ। নিজেকে নববী সা : এঁর মতো সাজাতে হলে অবশ্যই সিরাত পড়তে হবে। আজ মুসলিম তরুণ-তরুণীরা রবীন্দ্রনাথ, শরৎ, নজরুল পড়ে কিন্তু সিরাত পড়ে না। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল সঙ্গীত হলে আর কিছুই লাগে না। অথচ তাদের উচিত ছিল, সিরাত পড়া। এবং সিরাত অনুযায়ী নিজেদের জীবন বাস্তবায়ন করা। তাই আমি বলবো, প্রতিটি ঘরে ঘরে সিরাত রাখবেন।
তিনি বাতিঘরের এ আয়োজনের প্রশংসা করে বলেন যে তরুণরা ধারাবাহিক এ সিরাত বই বিতরণের আয়োজন করেছে, সত্যিই এটি একটি ব্যতিক্রম ও খুব সুন্দর উদ্যোগ। আমি তাদের এ কাজে সাধুবাদ জানাই।
মুফতি ওমর আহমাদ বলেন, সিরাত ঈমানের একটা অংশ। কেউ সিরাত না পড়লে বা সিরাত সম্পর্কে না জানলে তাঁর ঈমান অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আজ আমাদের অনেকের অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমরা প্রিয় নবী সা:-এঁর নামই শুদ্ধরূপে জানি না। নাম জানলেও তাঁর জীবন ও ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই জানি না। তাই আমাদের ভালোভাবে সিরাত পড়তে হবে। আজকে তরুণরা সিরাত বিষয়ক বই বিতরণের মতো কঠিন কাজে হাতে দিয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আমি তাদের জন্য দুআ করি।
মুফতি মোহাম্মাদ আলী মসজিদের ইমাম ও খতিব, মাওলানা দ্বীন ইসলাম বলেন, হযরত রাসূলের কারীমের জীবন ও ইতিহাস না জানার কারণে, না মানার কারণে আমাদের জীবন হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেছে। আমরা উদ্দেশ্যহীনভাবে জীবন-যাপন করছি। সুন্নত তরিকায় জীবন-যাপন করলে জীবনটা কতোটা আলোকময় হয়ে ওঠে সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই নেই। আর তাই আমাদের সিরাতের বই বিতরণের এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাতিঘর সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি আমিন আশরাফ। উপস্থিত ছিলেন, আশিক আশরাফ, সুলতান আফজাল আইয়ুবী, নকীবুল হক ও আবদুল্লাহসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনেকেই।
আলোচনার এক পর্যায়ে প্রায় অর্ধশতাধিক উপস্থিত জনতাকে সিরাত বিষয়ক বই বিতরণ করা হয়। বই বিতরণ করেন, মাওলানা শামসুল ইসলাম ও মুফতি ওমর আহমদ সাহেব। এরপর সভাপতি মহোদয়ের দোআর মাধ্যমে সিরাত বই বিতরণ কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্বের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।