সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পাটুয়াভাঙ্গার নলা বিলে পলো দিয়ে মাছ ধরার হাত
/ ১৬৯ Time View
Update : বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০২০, ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ

আকিবুর রহমান : শীতের ঘন কোয়াশায়, ঠান্ডায় যখন প্রকৃতি কাবু, তখন মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠছে পাকুন্দিয়াসহ প্বাশ্ববর্তী থানার কয়েক হাজার মাছ শিকারিরা।সাধারণত কার্তিক মাসে বড় বিল, খাল, জলাশয় ও ছোট নদীতে পানি কমতে শুরু করলে মাছ ধরায় মেতে ওঠেন স্থানীয়রা।

আজ বুধবার (১১ নভেম্বর) পাকুন্দিয়া পাটুয়াভাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী নলা বিলে অনুষ্ঠিত এ মাছ ধরার “হাত” উৎসবে ভোর রাত থেকেই নানা জায়গা থেকে আগত মাছ শিকারীদের হৈ চৈ কলরবে মুখরিত পুরো নলা বিলের চতুর্দিক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,কাপাসিয়া, কটিয়াদি, মনোহরদী, হোসেনপুর, নিকলী, কিশোরগঞ্জ সহ প্বার্শবর্তী বেশ কয়েকটি থানার হাজার জনেক উৎসুক মাছ শিকারীরা এতে অংশ নেন। পাটুয়াভাঙ্গার নলা বিল ছাড়াও বেজোর নালা, জোরনালা, নওভাগিয়া, চেঙ্গামারা, কুমুরঢাঙ্গা, পুর্বইদ্দা এরকম নানা বিলে প্রতি বছরের এ সময়টাই এসব মাছ ধরার হাত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতি বছর উৎসবের মধ্য দিয়ে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য মাছ ধরার এ আনন্দে অংশ নেয় নানা শেণি-পেশার মানুষ। তারা পলো (মাছ ধরার ফাঁদ) দিয়ে দলবেঁধে মাছ শিকার করে। শৌখিন মৎস্য শিকারিরাও বাদ যান না। এ এক মিলনমেলায় পরিণত হয় পুরো বিল। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায় বাংলার নানা বিলে।

পাকুন্দিয়া অঞ্চলে এ মাছ ধরা উৎসব ‘হাত ‘ নামে পরিচিত, কোন কোন অঞ্চলে এটিকে বৈত/ বৈদও বলে। একসময় বৈত দলের আলোচনার ভিত্তিতে মাছ ধরার নির্দিষ্ট জলাশয়, তারিখ, সময়, যাত্রার স্থান নির্ধারণ করে গ্রামের হাট-বাজারে ঢোল পিটিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হতো।

নির্ধারিত স্থানে যথা সময়ে শিঙ্গায় ফুক দেওয়া হতো বার বার। আর শিঙ্গার শব্দ শুনে নিজ নিজ পছন্দ মতো মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে দলবেঁধে সমবেত হতো সৌখিন মাছ শিকারিরা। কালের আবর্তে আধুনিকতার ছোঁয়ায় যোগাযোগের নানা নতুন মাধ্যম আসলেও মাছ ধরার এ আনন্দে যেন কোন কমতি নেই ।

মাছ ধরার এ উৎসবে যে কেউ এতে সামিল হতে পারেন। মাছ শিকারী সবার হাতে থাকে মাছ ধরার সরঞ্জাম পলো, হ্যাংগার জালি, পলো জালি, হ্যাগা, মুঠ জাল, কোঁচা, ক্যাটা ইত্যাদি। বৈত উৎসবে অংশ নেওয়াদের মধ্যে অনেকে মাছ পান।
একটা মাছ ধরা মানে পরিবার ও সবার কাছে নিজের অনেক গৌরব অর্জন করা।
আবার অনেকে একটি মাছও পান না। কিন্তু কারও কোনো দুঃখ থাকে না। মাছ ধরা উৎসবে যোগ দেওয়াটাই মুল উদ্যেশ্য হয়ে যায়।

পাটুয়াভাঙ্গার নলা বিলে এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ শিকার। রুই, কাতলা, মিরর কার্প, শোল, গজার, বোয়াল, মিনার কার্প, টাকি, নানা প্রজাতির ছোট মাছও শিকার করা হয়।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ