মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম সেরা অভিবাদন
/ ২৪৪ Time View
Update : শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

মুহাদ্দিস আজিম উদ্দিন বিন মজনু

ইসলামের শেআর ও প্রতীক পর্যায়ের একটি আমল হচ্ছে সালাম। এটি একটি দুআ এবং পুণ্যময় ইবাদত। সালাম আরবি শব্দ, এর অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, শুভকামনা। সালাম একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন পরিপূর্ণ ইসলামি অভিবাদন।

‘সালাম’ আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম। (সুরা-৫৯ হাশর, আয়াত: ২৪)। আল্লাহ তাআলা প্রথমে আদি মানব হজরত আদম (আ.)–কে সালাম শিক্ষা দেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা হজরত আদম (আ.)–কে সৃষ্টি করে বলেন, যাও ফেরেশতাদের সালাম দাও এবং তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেয়, মন দিয়ে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। সে অনুযায়ী হজরত আদম (আ.) গিয়ে ফেরেশতাদের বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’, অর্থ ‘আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’ ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, ‘আসলামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’, অর্থ ‘আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।’ (মিশকাত: ৪৬২৮)।

সালাম বিষয়ে ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ (স:) এর দরবারে এক লোক এসে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে বসে পড়ল।রাসূলুল্লাহ (সা:) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে দশটি নেকি পেয়েছে। তারপর আরেকজন এসে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বলে বসে গেল। রাসূলুল্লাহ (সা:) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে বিশটি নেকি পেয়েছে। অতঃপর আরেকজন লোক এসে ‘আসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ পর্যন্ত বলে বসে গেল। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে ত্রিশ নেকি পেয়েছে।(আবু দাউদ ৫১৯৫, তিরমিজি ২৬৯০)

সালামের উচ্চারণে আমরা সচরাচর যে ভুলগুলো করে থাকি তা হল- স্লামালাইকুম, সালামালাইকুম, আস্লামালাইকুম, আস্লাআলাইকুম, সেলামালাইকুম, ইস্লামালাইকুম, অয়ালাইকুম ইত্যাদি বলা। অথচ, এই শব্দগুলো বলার কারণে সালামের অর্থ ঠিক থাকেনা। তাই সঠিক অর্থ বজায় রাখতে সহীহ ও বিশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেওয়া আবশ্যক।

কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়াম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেছেন, শুদ্ধভাবে সালাম দেওয়া ও আল্লাহ হাফেজ বলা নাকি বিএনপি-জামায়াতের মাসয়ালা ও জঙ্গিবাদের চর্চা। অথচ সালাম দেওয়া মুসলমানদের ছয়টি অধিকারের মধ্যে একটি অধিকার এবং মহান আল্লাহর নির্দেশ।আল্লাহ বলেন, তোমরা যদি সালাম পাও তবে তোমরাও তারচেয়ে উত্তম রুপে সালামের জবাব দাও অথবা অনুরুপ শব্দই বলে দিবে।(সূরা নিসা:৮৬) আর এই জ্ঞানপাপীরা বলে শুদ্ধভাবে সালাম দেওয়া জামায়াতে মাসয়ালা। ড.জিয়া রহমান সালাম ও আল্লাহ হাফেজকে জঙ্গীবাদের শিক্ষা বলে রীতিমত ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। একটা মানুষ ইসলাম সম্পর্কে কতটা অজ্ঞ হলে এমন মাতলামি মূলক কথাবার্তা বলতে পারে।
একটি দেশের সর্বশ্রেষ্ট বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং প্রতিনিধি হয়ে যদি এমন কথা বলে তাহলে এ লজ্জা রাখি কোথায়। লজ্জা শব্দটা ব্যবহার করলেও শব্দটা লজ্জা পাবে, প্রতিবাদের ভাষা নেই, ঘৃণা করারও ভাষা নেই। জঙ্গীবাদের নামে ইসলাম ও ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার দায়ে ওনাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

মুহাদ্দিস আজিম উদ্দিন বিন মজনু
ইমাম এন্ড খতীব; হ্যাটফিল্ড জামে মাসজিদ, আমেরিকা।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ