মো আরমান হোসেন
সমাজে কিছু মানুষ সবসময়ই অন্যের সমালোচনা বা অন্যকে ঠকাতে ব্যস্ত থাকে, হোক তা নিদিষ্ট ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী। তাকে কিভাবে ছোট করবে বা তার অধীনে নিয়ে আসবে সেই চেষ্টায় করতে থাকে। কিন্তু একবার নিজের দিকে থাকিয়ে দেখতে চাই না, সে কতটুকু ঠিক বা বেঠিক? সে কতটুকু ভাল কাজ করছে?
এখানে কে অন্যায়ের পথে। আর এটা হয়তো তার তখনি বুঝে আসে যখন এমন পরিস্থিতিতে সেই ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী পতিত হয়। কিন্তু তখন বুঝে আসলেও তারা পূর্বের ভুল সংশোধন করতে চায়না। কিন্তু এখানে সে অন্যকে অন্যায়ভাবে যেভাবে ঠকাতে চেয়েছিল, সেই ভাবে এখন তাকে ঠকানো হচ্ছে, তখন সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে। একটি জিনিস বুঝার দরকার এখানে কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নেওয়া, সে যেমন অন্যায় করেছিল তার থেকে দেখেই শিক্ষা নিয়ে আজ তার উপর সেই অন্যায় পতিত হচ্ছে।
যেমন আজকাল দেখা যায় কোন দলের কেউ ধর্ষণ করলে প্রথমই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেয়, আর বলে আমরা তাদের পক্ষে নয়, এবং তাদের কে আমাদের দলে রাখবো না। সুতরাং এই দুই একজন আমাদের দলে থেকে অপরাধী করায় আমাদের দলের সবাই অপরাধী নয়। আমাদের অপরাধীর দোহাই দিয়ে বানচাল করতে পারবে না। আমি তাদেরকে বলি যারা এই ধরনের কথা বলে ও সাপোর্ট করে৷ তোমরা এত সুন্দর করে এই জিনিসটা বুঝলা, তাহলে যখন কেউ আলেম এর লেবাস ধরে অপরাধ করে অথচ তোমাদের মত দলে থেকে নয়, আলেম সমাজের বাহিরের , সে লেবাস ধরে অপরাধ করে তখন তোমরা পুরো আলেমসমাজকে কেন অপরাধী বলে থাক? আলেম গড়ার কারখানা মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দাও? এটা কি ধরনের বিচার?
তাহলে তোমাদের কি ইহা ন্যায়বিচার? নিজ দলের কেউ অপরাধ করলে পুরো দল অপরাধী নয়, কিন্তু লেবাস ধরে অপরাধ করলে, যেই দলের লেবাস ধরে সেই দল পুরো অপরাধী?
সাধারন ভাবে যদি দেখি এটা যদি তোমাদের সঠিক হয়ে থাকে তাহলে তোমাদেরকে অপরাধী বলাতো আর বেআইনি হয়নি। এখানে যদি মনেকরি তোমাদের দলের না হয়ে তোমাদের লেবাস ধরে অপরাধ করে থাকে তাহলে তোমরা সবাই অপরাধী। আর এটা বলাতে যদি তোমাদের কষ্ট লেগে থাকে তাহলে বুঝে নাও তোমরা যাদেরকে এমন ভাবে অন্যায় ভাবে অপরাধী বলতে তাদেরও এমন কষ্ট লাগে। বরং তাদের কষ্ট বেশি কারন তাদের দলের নয় বেশ ধরা আলেম। কিন্তু তোমাদের দলের হয়েও অন্যায় করায়, তোমাদের সমালোচনা ও অপরাধী বলায় এখন তোমাদের বিবেক জাগ্রত হয়েছ যে এটার জন্য ব্যক্তিই দায়ী। তাহলে এত বছর যাবৎ একজন দোষ তাদের পুরো গোষ্ঠীর উপর অপবাদ চাপিয়ে হয়রানির করে আসছো, তারা সেটা কিভাবে মানবে?
মনে রেখো পরীক্ষা চলিতেছে, ফলাফল এখনো প্রকাশ হয়নি, যখন ফলাফল প্রকাশ হবে তখন দেখবে (আমাকে মাপ করবেন) ক্ষনিকের সুখ দশ মাসের কষ্ট, তোমাদের হবে ক্ষনিকের শান্তি সুখ অনন্ত কালের অশান্তি, দুঃখ কষ্টের স্থান জাহান্নাম। সুতরাং নিজের জন্য যাহ চাও পরের জন্যও তাও করো, নিজের নিকট যা অপছন্দনীয় তা অন্যের নিকটও পছন্দনী।এ হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে। (মুসলিম ১/১৭ হাঃ ৪৫)
তাই নিজে ভাল নিয়ে পরের জন্য খারাপ রেখো না। বরং নিজের চেয়ে অন্যকে প্রাধান্য দাও আল্লাহ তোমায় উত্তম বদলা দিবে। ন্যায়বিচার কর,ন্যায়বিচার এর পক্ষে থাকো সমাজটা সুন্দর হয়ে ফুটবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুক। আমিন