মহিম ইসলামঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়ায় উপজেলায় নিখোঁজের ৩ দিন পর ডোবা থেকে খলিলুর রহমান ফাহাদ (৯) নামে শিশুর মৃত দেহ পাওয়ার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
দায় এড়াতে পুকুর থেকে অদুরে পাশের ডুবায় লাশ লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল আদালতে এক কিশোরের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি।
পুলিশের ব্যাপক অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রতিবেশি ইমন নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করে এ মৃত্যু রহস্যের কূলকিনারা পাওয়া যায়।
অভিযোক্ত কিশোর কোনো প্রকার ভয়ভীতি অনুশোচনা ছাড়ায় নিহত ফাহাদের আত্মীয়স্বজন ও পুলিশের সাথে মরদেহ উদ্বার অভিজানে সাহায্য করে সেই কিশোরই সকলকে তাক লাগিয়ে অবশেষে ফাহাদের মৃত্যুর দায় স্বীকার করে আদালতের কাছে
পুলিশের কাছে ১৬১ ধারার জবানবন্দি শেষে মঙ্গলবার বিকালে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুন নূর এর কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ইমন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে জানায়, সে গ্রামের প্রয়াত আইন, বিচার ও নৌপরিবহন উপ-মন্ত্রী এবিএম জাহিদুল হকের পুকুরে অল্প অল্প সাঁতার কাটতে জানা ফাহাদকে সে ভাল করে সাঁতার কাটতে শিখাতে চেয়েছিল।
এ সময় কয়েকজন কৃষি শ্রমিকও ও-ই পুকুরে গোসল করতে নামায় এপারের পানি ঘোলা হয়ে ওঠে। এ সময় সে ফাহাদের বুকের নিচে একটি হাত রেখে সাঁতরে তাকে নিয়ে পুকুরের ওপারে যাওয়ায় চেষ্টা করে।
কিন্তু; মধ্য পুকুর পার হওয়ার আগেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে হাতের ওপর ফাহাদের স্পন্দনহীন ও প্রাণহীন দেহ ভাসতে দেখে আঁৎকে ওঠে সে। তখন সে এ মৃত্যুর দায় এড়াতে ভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নেয়।
কৃষি শ্রমিকরা গোসল সেরে ওঠে যাওয়ার পর ইমন ফাহাদের প্রাণহীন দেহ পার্শ্ববর্তী একটি ডোবার কচুরিপানার নিচে নিয়ে লুকিয়ে বাড়ি ফিরে।
উপরন্তু; স্বজনদের এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশের খোঁজাখুঁজি এবং মরদেহ উদ্ধারের সময়ও ইমন পুলিশ এবং ফাহাদের স্বজনদের সঙ্গ দেয়।
গত (১৩ আগস্ট) দুপুর ২ টায় উপজেলার নারান্দী ইউনিয়নে ডোবা থেকে ফাহাদের ভাসমান মৃত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
নিহত ফাহাদ নারান্দী ইউনিয়নের নারান্দী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস এর ছেলে। এবং স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যলয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
ফাহাদ গত ১০ আগস্ট সোমবার দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুরে গুসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়।পুলিশ ও একাধিক সুত্র জানা গেছে গত সোমবার দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুরে গুসল করতে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়।
পরবর্তীতে বিকাল পেড়িয়ে সন্ধা হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় আশপাশ ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খুঁজাখুঁজি করেও ফাহাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এমন পরিস্থিতিতে পরদিন ১১ আগস্ট ফাহাদের সন্ধানে চেয়ে পাকুন্দিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ফাহাদের বাবা আবদুল কুদ্দুছ।
এদিকে নিখোঁজের তিনদিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশ্ববর্তী অদুরে একটি ডোবাতে ফাহাদের ভাসমান মৃতদেহ দেখতে পায় এলাকা বাসি।
খবর পেয়ে ডোবা থেকে ফাহাদের মৃত দেহ উদ্ধার করেছিল পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ।