পাপ্র ডেস্ক :
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া এই বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশংকাজনক। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে লেবাননের মানুষজন স্তব্ধ।
মঙ্গলবার এক বৈঠকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বলেছেন, বৈরুতের একটি গুদামে প্রায় ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ ছিল এবং তাই বিস্ফোরিত হয়েছিল।
এ ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বুধবার সারাদেশে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ রাষ্ট্রীয় শোক শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।
তিনি আরও বলেছেন, এটি অগ্রহণযোগ্য যে, কোন ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া প্রায় ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট একটি গুদামে ছয় বছর ধরে ছিল।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার বিস্ফোরণে সময় এলাকার বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। বন্দর এলাকার এই বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছিল। লেবানন থেকে ১৫০ মাইল দূরে এই কম্পন অনুভূত হয়। বিস্ফোরণের পর সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান স্থানীয়রা। অনেক ভবনের জানালার কাচ ভেঙে গেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, এখনো অনেক লোক নিখোঁজ রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্বজনদের খোঁজ করছে মানুষ। বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে উদ্ধার কাজ ব্যহত হচ্ছে। বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য সময় প্রয়োজন।
লেবাননের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে আল জাজিরা জানিয়েছে, বন্দরের রাসায়নিকের গুদাম থেকে ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে। অন্যদিকে রাষ্ট্র-পরিচালিত ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, বিস্ফোরণের আগে বন্দরের কাছে আতশবাজির একটি গুদামে আগুন লেগেছিল।
লেবাননে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেবাননের জনগণের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন। তিনি জরুরিভাবে উদ্ধার কাজে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে এই বিস্ফোরণকে ‘ভয়ানক হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইরান, ইসরায়েলও এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে লেবাননকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এছাড়া লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন সেনাবাহিনীকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টহলের নির্দেশ দিয়েছেন।
সুত্র : বিবিসি, সিএনএন, ফ্রান্স ২৪