মোঃ আরমান হোসেন
গতকাল ২৫ ই জুলাই রাত আটায় অর্ধশতবর্ষ পুরোনো দিনের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে শৈশবকাল এর বন্ধুদের ফিরে দেখায় কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের ভার্চুয়াল রি-ইউনিয়ন অনুষ্ঠিত হয়। চলে দীর্ঘ চার ঘন্টা, ফুটে উঠে শৈশবস্মৃতি” দেখা যায় সেই বন্ধুদের স্কুল শুরু হওয়ালগ্ন হতে যারা ছিল, বিভিন্ন ব্যাচ এর। তারা আজ অনেকে কাঁচা পাকা দাড়ি গজানো নিয়ে হাজির হয়, আবেগময় এক মুহুর্ত। অনেকের পরিচয় আজ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, মাস্টার উচ্চপদস্থ স্থানের পেশায়। যুক্ত ছিল সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক, তাদের সাথে সবার দেখা ও কথায় আবেগে যেন কথা বলতে পারছে না, তার পরও যা বলা হয়।
চোখের জল মুছতে মুছতে কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চবিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী অরুন কান্তি সরকার বললেন , তোমাদের সফলতায় হাসি ফুটে আমাদের মুখে । আজ তোমাদের সফলতার গল্প শুনে গর্বে আমাদের বুক ভরে উঠেছে । আমার শিক্ষকতার জীবন স্বার্থক । তোমরা আমাদের এখনো যে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা দিচ্ছ তা একজন শিক্ষকের জন্য শ্রেষ্ট উপহার । দোয়া করি তোমরা অনেক বড় হও । কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সময় কাল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় । এই স্কুল ও তোমাদের স্মৃতি নিয়ে আমি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করব । গতকাল কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চবিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন । এসময় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবার চোখে ছিল জল । তার এই আবেগঘন বক্তব্য সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে ।
কাচিক স্কুলের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক জনাব খলিলুর রহমান স্যারের কান্না জড়িত কন্ঠে বক্তব্য ছিল সবার কাছে অত্যন্ত আবেগঘন । যারা শুনছিলেন তাদের কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি । অনেককেই চোখ মুছতে দেখা গেছে । অনুষ্ঠানের শেষে তিনি সবার মঙ্গল কামনায় দোয়া পাঠ করেন । সংযুক্ত ছিলেন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক জনাব আব্দুল হক । তার বক্তব্যও ছিল আবেগঘন আর স্নেহের পরশ । তিনি সবার প্রতি প্রান উজাড় করা ভালবাসা ছড়িয়ে দিয়েছেন তার স্বল্প সময়ের বক্তব্যে ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক তার বক্তব্যে , কাচিক স্কুলের ঐতিহ্য ও সূনাম ফিরিয়ে আনতে সকল প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র/ছাত্রীদের পূর্ন সহযোগিতা কামনা করেন । তিনি সকলের সহযোগিতায় একটি রি ইউনিয়নের আয়োজনের করতে সকলকে আহ্বান জানান ।
প্রায় সাড়ে চার ঘন্টাব্যাপী আলোচনায় কাচিক স্কুলের সিনিয়র ও জুনিয়র ভাই/বোনদের প্রায় শতাধিক অংশ গ্রহন গতকালের ভার্চুয়াল পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে । তাদের মূল্যবান বক্তব্য ও স্মৃতিচারণে প্রাণবন্ত ছিল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত । স্মৃতি চারন করতে গিয়ে কখনো হাসি , এখনো নীরবতা , কখনো কাঁদছেন অনেকেই । সব মিলিয়ে এমন একটি আয়োজন সত্যিই সার্থক ও সফল হয়েছে তার শতভাগ কৃতিত্ব ডাক্তার ফরিদ সোবহানি ও জুমি সাহানা, তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সম্মিলিত সকলের সহযোগিতা কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীদের ভার্চুয়াল পূর্নমিলনী সকলের কাছে স্মৃতির পাতায় অনন্য নজির হয়ে থাকবে ।