
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় দুই মাস ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গাইনী চিকিৎসক না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর তাই সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ভর্তি হতে আসা প্রসূতিদের ফেরত দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ থাকা এ অপারেশন কার্যক্রম কবে চালু হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য মতে, ১৯৭৪ সালে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যাত্রা শুরু করে। ২০১২ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরন হয়। এ সময় অপারেশন থিয়েটার চালু করা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ফলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য যেতে হতো বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে।
২০২২ সালের ২০ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর-এ-আলম এখানে যোগদান করেন। পরে তিনি নিজ উদ্যোগে ২০ জুন সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রমের উদ্ভোধন করেন। ৩০ জুলাই প্রথম এখানে সিজারিয়ান অপারেশন হয়। এর পর থেকে গত দুই বছরে মোট ২৩৮টি সিজারিয়ান অপারেশন হয়। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় নয়টি সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম চালু হওয়ায় স্থানীয়রা অনেক উপকৃত হয়েছে। জেলা শহরে যেতে হয়নি। এখানে সিজারিয়ান অপারেশনের পাশাপাশি প্রসূতি মায়েদের প্রসব-পূর্ব, প্রসবকালীন ও প্রসব-পরবর্তী সেবা দেওয়া হতো। হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার চালু হওয়ায় খুশিও হয়েছিল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা।
উপজেলার হোসেন্দী নামাপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদির বলেন, আমার বোনের সন্তান হবে। ব্যাথা উঠলে আমরা তাকে নিয়ে এ হাসপাতালে এলে জানতে পারি এখানে গাইনী চিকিৎসক নেই। তিনি অন্যত্র চলে গেছেন। আমাদের অন্যত্র যেতে বলে। পরে কিশোরগঞ্জে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে সিজার করাই। এখানে গাইনী ডাক্তার থাকলে তো আর আমাদের এত কষ্ট করতে হতো না।
এ ব্যাপারে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. নজিবুল হক জানান, এখানে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (গাইনী) শাহ মোহাম্মদ হাসানুর রহমান সিজারিয়ান অপারেশন করতেন। কিন্তু তিনি গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বদলি হয়ে পাশর্^বর্তী কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে গেছেন। তাই এখানে সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসা প্রসূতি মায়েরা ফিরে যাচ্ছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর-এ-আলম বলেন, বর্তমানে গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে চিকিৎসক চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। গাইনী চিকিৎসক পেলেই এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
-ইনকিলাব