•কবি : আকিব শিকদার
মা বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রা যাবে, স্বপ্ন ছিলো যাদের
তাদের দাফন হয়েছে গন-কবরে।
সবাই মরে গেলেও আমার কিচ্ছু হবে না – ভেবেছিলো যারা
তাদের লাশ বহন করতে দোয়ারে দাড়িয়ে আছে এম্বুলেন্স।
সংক্রামক রোগের ভয়ে ঘরবন্দি আমরা। ফোন রিসিভ মানেই
আজ অমুকের অসুখটা ঊর্ধমূখী, তমুক বেঁচে নেই…
লাইভ টেলিকাস্টে কান্নায় কন্ঠ ভারী খবর পাঠকদের;
সংবাদপত্রগুলোতে মৃতের মিছিল ছাপা।
স্কুল কলেজ, অফিস, কলকারখানা, উপাসনালয় বন্ধ।
খেলার মাঠে ছেলেপুলে নেই, নেই শপিংমলে
সুন্দরীদের আনাগোনা। হাসপাতালগুলো যেন যমদূতের রেস্তরাঁ।
ত্রাণ বিলানোর বেলা সেলফি তুলে যারা ফেইসবুকে
লাইক-কমেন্টের ঝড় তুলতো, তারা দান করছে নিরবে।
পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্দিনে খাবে বলে যারা
খাদ্য মজুদ করেছিলো, তাদের মজুদমাল
রেখে দিচ্ছে বারান্দায়। কে খাবে? মহামারীতে মরে
ঘরের লোকেরা যে পরপারবাসী।
যখন শুনি সেবা দিতে এসে রুগাক্রান্ত হলেন ডাক্তার কিংবা নার্স,
মনেহয় যেন একটি অশুভ হাত
চেপে ধরেছে গলা, বন্ধ স্বাভাবিক নিশ্বাস প্রশ্বাস।
যখন শুনি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসে আক্রান্ত প্রতিরক্ষা বাহিনীর কয়েকটি দল,
মনেহয় যেন চোখের সন্মুখে ডুবে যাচ্ছে জাহাজ, নাবিকের নিরুপায় আফসোস।
আমাদের এই মৃত্যু থেকে পালিয়ে বাঁচা আর কতো!
কখনো খবর পাই করোনার সঙ্গে লড়ে বেঁচে উঠেছে কেউ,
মনেহয় যেন আকাশে মেঘের আড়ালে সূর্যের উঁকি।
ভেষজ চিকিৎসায় প্রতিকার পেয়েছে
কোন গ্রামের কিছু লোক, মনেহয় যেন প্রচন্ড দাবদাহে
মরতে মরতে হঠাৎ দু’ফোটা বৃষ্টির স্পর্শে
বাঁচার স্বপ্ন দেখছে একটি বাগান।
যখন শুনি অপ্রতিশেধ্য এ রোগের ভেকসিন আবিষ্কারে সফল হয়েছেন এক গবেষক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হওয়া তার ছবি দেখে ভাবি
মানুষরূপে দাড়িয়ে আছেন ঈশ্বর।