মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পাকুন্দিয়ায় পুকুর থেকে ধরা পড়লো নিরব ঘাতক ‘কেউটে’ সাপ
Update : বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ণ

পাকুন্দিয়া দেখা মিলেছে নীরব ঘাতক খ্যাত বিষধর সাপ কালাচ বা কাল কেউটের। গতরাতে উপজেলার নারান্দি ইউনিয়নের সনমানীয়া গ্রামে পুকুর সেচ দিতে গিয়ে দেখা মেলে এই সাপটির। পরে সেটি মেরে ফেলা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন ‘এফএন হাসান’ নামের এক যুবক। সেখানে অনেক নির্বিষ ও অনেকে বিষধর মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

কালাচ সাপ বা কাল কেউটে কতটা ভয়ঙ্করঃ

এই সাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, বিষাক্ত সাপদের একটি হচ্ছে গুপ্তঘাতক বিষাক্ত এই কেউটে, এই সাপ কামড় দিলে বিষ প্রয়োগ হবেই। এটি একটি ফণাহীন সাপ। বাংলাদেশে এই কেউটে সাপ কালাচ নামেও পরিচিত।

এদের ইংরেজি নাম Common Krait বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus caeruleus। ঘুমন্ত মানুষকে কামড় দেয় বলে এই সাপকে ঘামচাটা সাপও বলা হয় কারণ প্রচলিত আছে এই সাপ ঘুমন্ত মানুষের বিছানায় উঠে আসে ঘামের গন্ধ নিতে।

তবে এর পক্ষে-বিপক্ষে অনেক নানা মত থাকলেও বৈজ্ঞানিকভাবে সাপের ঘ্রাণ শক্তি আছে বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশের সব সবজায়গায় এই সাপ আছে কিন্তু মানুষের চোখে পড়েনা কারণ এরা নিশাচর। গভীর রাতে এরা বিচরণ করে। এরা খাড়া ভাবে উপরে উঠতে পারে। এবং উপরে উঠে মানুষের বিছানায় চলে যায়। বিছানায় গিয়ে মানুষের পাশেই অবস্থা করে বলেই একে ঘামচাটা সাপ বলা হয়। ঘুমন্ত অবস্থায় পাশ ফেরার কারণে মানুষের শরীরের নিচে চাপা পড়ে অথবা হাত পা নড়াচড়া করলে শিকার ভেবে নীরবে কামড় দিয়ে দ্রুত কেটে পড়ে।

এই সাপের সব চেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হচ্ছে এরা শত ভাগ বিষ প্রয়োগ করে। অন্যান্য বিষাক্ত সাপ কামড় দিলে তার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ থাকে ড্রাইবাইট। ড্রাইবাইট হচ্ছে কামড় দেবে ঠিকই কিন্তু বিষ প্রয়োগ করবেনা। তবে কালাচের কামড়ে কোন ড্রাইবাইট নেই। সে কামড় দেওয়া মানেই বিষ প্রয়োগ হবে। তার সব চেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে এই সাপে কামড় দিলে মানুষ তা বুঝতেই পারেনা কারণ সাপটির দাঁত মশার হুলের মত তাই কামড়ে বেশিরভাগ সময় দাগ পড়েনা কোন রকম জ্বালা যন্ত্রণা হয় না, আক্রান্ত জায়গা ফুলেনা।

৯০% রোগী বুঝতেই পারেনা তাকে সাপে কামড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী ভোরবেলায় প্রচণ্ড তলপেট ব্যথা নিয়ে ঘুম থেকে উঠে, রোগীর চোখের পাতা পড়ে আসে, বমি বমি ভাব হয়, জ্বর হলে যেমন অস্বস্তি হয় তেমনটা হয়। সময়ের সাথে সাথে রক্ত জমাট বাঁধা শুরু করে তাই এ অবস্থায় রোগীকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ বা জেলা সদরে নিতে হবে দ্রুত। সেখানে নিয়ে এন্টি স্নেক ভেনাম (এভিএস) প্রয়োগে চিকিৎসা না দেওয়া হলে রোগী ধীরে ধীরে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবে।

উপজেলা সদরে সাপের কামড়ের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভাল থাকলে বাংলাদেশে সাপের কামড়ের মৃত্যুর হার রোধ করা যেত। বাংলাদেশের মেডিকেল হাসপাতালগুলো ছাড়া অন্যান্য হাসপাতালে সাপে কামড়ের তেমন ভালো চিকিৎসা না থাকা এবং সর্বোপরি যানবাহন ও যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে এত বেশি রোগীর দুঃখজনক মৃত্যু হয়। তাই সাপে কামড় দিলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।কালাচের প্রজনন মৌসুম মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ