
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় প্রথমবারের মতো মিশ্র আম চাষে সাফল্য পেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম। বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত জমিতে সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রজাতির আম চাষ করে সফল হয়েছেন এই উদ্যোক্তা। যখন বাজারে কোনো আম থাকবে না অসময়ে বাজারে উঠবে এই প্রজাতির আম। তাই আমের চাহিদাও থাকবে ভালো। প্রতি কেজি আম বিক্রি হবে ৪০০ টাকার উপরে।
জানা গেছে, সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে পাকুন্দিয়া পৌর সদরের শ্রীরামদী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৫৬) নিজ বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত ৯ শতাংশ জায়গায় বারি-৪, ব্যানানা ম্যাংগো ও আমেরিকান রেড পালমার আম সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করেছেন। আমের বাগানের জায়গায় মাটি ভরাটসহ মোট খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এসব জাতের আমের চারা সরকারি নার্সারি থেকে সংগ্রহ করেছেন তিনি। প্রথমবারই যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে লাভবান হওয়ার আশা জাহাঙ্গীরের।
বাগান ঘুরে দেখা গেছে, আম গাছে ঝুলছে তিন রঙের আম। কাঁচা আমে ভরে গেছে বাগান। থোকায় থোকায় ঝুলছে হালকা খয়েরি, হালকা কাঁচা হলুদ ও সবুজ রঙের আম। আম গাছ পোকা-মাকড় থেকে রক্ষা করতে ব্যাগিং করা হয়েছে। কিছু ব্যাগিং আবার খোলা হয়েছে।
উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার অনেক দিন ধরে ইচ্ছা ছিল আম বাগান করবো। সেই ইচ্ছা থেকেই বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত ৯ শতাংশ জমিতে এই বাগান করেছি। বাগানে ১৮০টি গাছ রয়েছে। এ বাগানে বারি-৪, ব্যানানা ম্যাংগো ও আমেরিকান রেড পালমার আম চাষ করছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে কোনো প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করিনি। সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করেছি। তাই বলা যাবে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত এই আম।
তিনি বলেন, বাগান করতে মোট খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। যে পরিমাণে ফলন হয়েছে আশা করছি লাভবান হবো। আনেকেই আগে থেকে অর্ডার দিয়ে রেখেছেন আম নেওয়ার জন্য। মনে হয় আম বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হবে না। বাগান থেকেই মানুষ নিয়ে যাবে। যারা বাড়ির আঙিনায় বাগান করতে চান কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে বাগান করলে ভালো করতে পারবেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর-ই-আলম জানান, নিরাপদ ফসল উৎপাদন আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। আমরা দেখেছি ফল বাগানগুলোতে কৃষকরা অনেক কীটনাশক ব্যবহার করার কারণে ফলের কোয়ালিটি নষ্ট হয়। আমরা এই বাগানে দেখতে পাচ্ছি কৃষক প্রচুর পরিমাণে ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করেছেন। যারা নিরাপদ আম উৎপাদনের চেষ্টা করছেন তারা কীটনাশক ব্যবহার না করে ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এই বাগানে তিন প্রজাতির আম চাষ করা হয়েছে। ফলনও চমৎকার হয়েছে। বাজারে যখন কোনো আম থাকবে না তখন এই আমগুলো পাকবে ও বাজারে যাবে। এই আমগুলো লেট ভ্যারাইটি হওয়ার কারণে কৃষক পর্যাপ্ত লাভবান হবেন। আমরা কৃষি বিভাগ কৃষকদের পাশে থেকে তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।