বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ভালবাসা দিয়েই ভালবাসা অর্জন হয়
Update : সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩, ১০:১৯ অপরাহ্ণ

জুয়েল মাহমুদ

ধরুন আপনার প্রচন্ড মন খারাপ। আপনি কারো কাছে ২০ মিনিট সময় চাইলেন। সে আপনাকে ২০ মিনিট সময় দিল। তার সাথে কথা বলে আপনার মন ভাল হয়ে গেল। সে কিন্তু দিনের বাকি ২৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট ই কাজ করবে না। হয়ত তার অঢেল ফ্রি সময়।ভেবে দেখুন সে আপনাকে তার জীবনের ২০ মিনিট সময় দিয়েছে।এই সময়টুকু দেয়া তার কর্তব্য না।এই জন্য কখনোই আপনি ভাবতে পারেন না -বিশ মিনিট সময় ই তো দিয়েছে,কি এমন করেছে,উনি তো ফ্রি ই থাকেন।

আরো সহজ ভাবে বললে-মনে করুন আপনার অনেক টাকার দরকার। কোন বিলিয়নিয়ার আপনাকে মাত্র এক’শ টাকা দিলো।এই টাকা দেয়া কিন্তু উনার দায়িত্ব না।উনি যে দিয়েছে এটাই সুন্দর বিষয়। মাত্র এক’শ টাকা দিয়েছে বলে আপনি উনার প্রতি ক্ষোভ ঝাড়তে পারেন না।ভবিষ্যতে যদি উনি আপনাকে আর টাকা না-ও দেয় তবু আপনি কোন অভিযোগ করতে পারেন না,কারন এই টাকা দেয়া তার দায়িত্ব না এবং এই টাকা পাওয়াও আপনার অধিকার না।উনি যে আপনাকে এক’শ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন এটাই উনার প্রতি আপনার সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকার জন্য যথেষ্ট।

আমরা বাংলাদেশিদের একটা মাইন্ড সেট হলো- কারো যেহেতু অঢেল আছে সেহেতু সে দিতে বাধ্য এবং তার কাছ থেকে পাওয়াটা আমরা একপ্রকার অধিকার মনে করি।

বঙ্গবাজার,গুলিস্তান, নিউমার্কেট ব্যবসায়ীদের ব্যবহার কেমন সেটা- সেখানকার যারা নিয়মিত ক্রেতা আছে তারা বিষয় টা খুব ভালো করেই জানে।আপনার সাথে তর্ক হলে এক ব্যবসায়ীর সাথে আরো ৫/৬ দোকানের ব্যবসায়ীরা আপনাকে হেনস্থা করবে।খারাপ ভাষা ব্যবহার করে আপনাকে যৌন হয়রানির মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। তারা এমন একটা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।২/৩ বছর আগেও কয়েক দোকানী মিলে এক মেয়েকে হেনস্থা করেছিল শুধু মাত্র একটা জামার দাম কম বলেছিল বলে।তাকে বাজে ভাষায় কথা শুনিয়েছিল।তারপর সেই মেয়ে বাধ্য হয়ে পুলিশের ৯৯৯ এর আশ্রয় নিয়েছিল। এই দোকানীরা শুধু মুখের ভাষায় আপনাকে উলঙ্গ করার মত অপমান কর‍তে সিদ্ধহস্ত।

সাকিবের টাকায় থু-থু দেওয়া ব্যাক্তির কথাই চিন্তায় করুন।সহায় সম্বল হারিয়ে যখন নিঃস্ব তখনও তার মুখের ভাষা,তার ব্যবহার কতটা বিশ্রী আর আক্রমনাত্মক ছিল!সে বলেছে একদিন আগেই বিশ হাজার টাকা তার হাতের ময়লা ছিল।একজন মানুষ নিঃস্ব অবস্থায় যদি ব্যবহার এমন হয় তাহলে ভাবুন তার যখন সব ছিল তখন তার ব্যবহার কেমন ছিল! কাপড় ব্যবসায়ীদের ব্যবহার আর মুখের ভাষা আমি অন্তত এক জীবনে ভুলতে পারবো না।

তাদের পায়ের নিচে মাটি না থাকলেও এরা হ্যাডম দেখায় এলিট শ্রেণীর। তাদের চাপার উপর দিয়ে রেলগাড়ির চাকা চলে গেলেও তাদের চাপার কিছু হবে না।এমন শক্ত আর বিশ্রি তাদের মুখের ভাষা আর ব্যবহার।অবশ্যই সব ব্যবসায়ী নয়;তবে অধিকাংশ ই এমন।

সাকিব সেখানে সবার দায়িত্ব নিতে যায়নি অবশ্যই।সহযোগিতার একটা ধারা শুরু করতে চেয়েছিলেন যেন বাকিরাও এভাবে এগিয়ে আসে। তাসকিন কে সে ম্যানশন করে বলেছিল আসার জন্য।

ছোট ছোট বালি কণা বিন্দু বিন্দু জল,গড়ে তুলে মহাদেশ সাগর অতল-সাকিব হয়ত সেই কাজটিই করতে চেয়েছিলেন।

সাকিব জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেয় এটা ভুল ধারনা বরং সে সরকারকে ট্যাক্স দেয়।সে ভাল খেলে দেশের জন্য ডলার এনে দেয় সেখান থেকে তাকে বেতন দেওয়া হয়।খেলা ছাড়াও তার বেশ কিছু আয়ের উৎস আছে।সাকিব বিশ টাকা দিবে, না বিশ হাজার টাকা দিবে এটা সম্পূর্ণ তার সিদ্ধান্ত। কিন্তু যারা এই টাকায় থু-থু দেয় তারা আর যাই হোক অভাবী না বরং চরম লেভেলের বেয়াদব আর অহংকারী।

বঙ্গবাজারের একটা ব্যবসায়ী সমিতি আছে তারা সিলেটের বন্যার সময় কত টাকা দিয়েছিল কিংবা জাতীয় কোন দুর্যোগের সময় এক টাকা দিয়েছে কিনা, কেউ কি বলতে পারবেন…?তাদের পূনর্বাসনের দায়িত্ব সরকারের সাকিবদের নয়।সে যে সহযোগিতা করতে আসতে চেয়েছে এটাই ব্যবসায়ীদের কৃতজ্ঞ থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল।তারা সাকিবের উদ্যোগ কে স্বাগত জানিয়ে সাকিবের মাধ্যমেই তারা অন্যদের থেকে কিছু পেতে পারতো।সাকিব কে ভালভাবে বুঝিয়ে বললে সাকিব ই কোটি টাকা ম্যানেজ করে দিতে পারতো।তার সেই সামর্থ্য রয়েছে।

সুন্দর ব্যবহার আর মুখের কোমল ভাষা দিয়ে অনেক কিছুই অর্জন করা যায়।যেটা করতে এই ব্যবসায়ীরা ব্যার্থ হয়েছে। রাগ,ক্ষোভ,অহংকার, দাম্ভিকতাকে উপেক্ষা করা যায়,ভালবাসা কে নয়।ভালবাসা পেতে হলে ভালবাসাই দিতে হয়।আপনার রাগ,ক্ষোভ,অহংকার, দাম্ভিকতা দিয়ে কখনোই ভালবাসা অর্জন করতে পারবেন না।

জুয়েল মাহমুদ 
মালয়েশীয়া প্রবাসী
সাত/চার/দুই হাজার তেইশ

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
আমাদের ফেইসবুক পেইজ