
ধূমপায়ী আবুল চাচারা আবারও হতাশ! এইটা কেমন বিচার? তারা শত বঞ্চনায় হতাশ হয়ে এইতো একটু-আধটু খায়! বার বার শুধু তাদের দিকেই নজর! চাচা মনে মনে ভাবছিলেন এইবার বিড়িদেবতা একটু মুখ তুলে চাইবেন! কিন্তু কই? ঐযে কি সব গিলে বুঁদ হয় আছেন, ফাঁকে বাজেট হয়ে গেল, ব্যাটার হুঁসই এলো না! এইডাও মনে হয় এইবার ছাড়তেই হবে! বঞ্চনার যেন আর শেষ নেই!
আবুল চাচা ভাবছিল বিড়ি তাইলে ছাইরাই দিবে। তার পরিবর্তে বড় লোকের মতো হতাশা কাটাবে। পার্টি করবে আর একটু আধটু গিলবে। হায় তারও উপায় নেই! আলোকসজ্জা আর এ্যলকোহল দুটোর দামই বেড়েছে আরও বেশী!
তবু আবুল চাচা খুশি! কুতকুতি বেগমের যেটার কারণে আবুল চাচার আজকের এই দশা সেই প্রসাধনী সামগ্রী আর এত বেশী লাগাতে পারবে না কুতকুতি! দাম বাড়বে।
দুধ ও দুগ্ধজাত পন্যের নাকি দাম বাড়বে। তা বাড়ুক। আবুল চাচার তো আর সেই সুযোগ নাই! কিন্তু আবুল চাচা ভাবছে, “হাতে তৈরি খাবারে ক্যামনে টেক্স নিবে?” প্রতি লোকমা গুনে নাকি তরকারির প্রকার গুনে? তাহলে একপ্রকার তরকারিই বেশী পরিমানে খাইতে হবে!
তবে আবুল চাচার হতাশাও বাড়ছে। লবনের দাম বাড়ানোর দরকারটা কি? একটু লবণই তো খাই দুটো কাঁচামরিচ ভাইঙ্গা?
এসির দাম বাড়ছে আবার কয় ঘরেই থাকতে হবে। হাওয়া বাতাস সব বন্ধ কইরা দিয়া আটকায়া মাইরালান উস্তাদ।
প্রসাধনীর দাম বাড়লে কি হবে, আটা-ময়দার দামতো কমে গেল! কুতকুতিরা হার না মানা জাতি, আটা-ময়দার সাথে দাম কমায় পেয়াজ-রসুনও মাখে কিনা কে জানে!
মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, পিপিই আর ঔষুধেরর দাম কমানোর দরকার কি? গরীবতো পাঁচ টাকার মাস্ক ৩৫ টাকা দিয়েই কিনতে হবে আর পিপিই-র নামে পরিত্যক্ত রেইনকোটই বিক্রি হবে। সেনিটাইজ আর হেল্থ প্রডাক্ট বাজারে পাওয়া যাবেই না আবার এক্সট্রা চার্জে সবই পাওয়া যাবে!
কমার মাঝে দুটি জিনিস বেস্ট- জুতা আর পাউরুটি….. ব্যাখ্যা নাই।
ম্যাডামদের সবাই চায় অগ্রাধিকার, হার মানবে না, বলবে সমানাধিকার!
দেখুন অসাঞ্জস্যতা! পারিবারিক সকল খরচ বহন করতে হয় পুরুষদের, আবার সমপরিমান ইনকাম করে করও বেশী দিতে হবে তাদেরই? করমুক্ত সীমা মহিলাদের বেশী হয় কোন যুক্তিতে? প্রশ্ন করিম চাচার। ব্যাটা ছেলেদের মরার উপর খরার ঘা কেন?
বাচ্ছারা রাত জাইগ্গা একটু আদটু কথা বলবে, একটু নেট ঘাটবে, ক্ষণে আঠার প্লাস, ক্ষণে আঠার মাইনাস! তাতেও বিপত্তি, দিল কল রেট-নেট রেট বাড়িয়ে! একদিনে ইউটিউবে যা আপলোড হয় একজন সারা জীবন দেখেও নাকি তা শেষ করতে পারবে না। তাহলে এগুলো কি অদেখাই থেকে যাবে? আহা! শুধু কি তাই! যে মেশিন দিয় দেখতে হয় সে মেশিনের দামও বাইরা গেল।
কি রং যে দেখাইলো। না, আর রং দেখানোর আর উপায় থাকলো না। রং এর দাম বাড়িয়ে দিলো। চাচার বউ চাচারে কয় “এত রং আয়ে কইত্তেইক্কা? রং তামশা বাদ দেও, রং এর উপপর টেক্স বইছে।” আর একবার মাথার স্ক্রু ডিলা হইলে শেষ! স্ক্রুর দামও বাড়ছে!
আবুল চাচার ভাইস্তার সন্দেহ সরকার করোনাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে চায়। না হলে করোনার ঔষুধ জর্দা পান, বিড়ি সিগারেটের কেন দাম বাড়বে! তবে চাচা খুশি তার উঠুনো এখন আর পানের পিক থাকবে না।
চাচার একটা বিষয়ে খটকা- বাজেরতো প্রস্তাবিত কইতাছে, তাহলে এখনই দাম বাড়লো ক্যামনে? আমারে জিগাইলো বিলাসী পন্যের যে দাম বাড়বো, আমি যে বিলাসী আর আমার মেয়ে বিলাসী, আমার কয় টেকা টেক্স আইবো? আপনিতো দিনে একবারের বেশী খেতে পান না আর আপনার মেয়েও! “আরে, বুঝনা? আমার একটা কুল বালিশ আছে আর আমার মেয়ের নাম বিলাসী”!
আচ্ছা, বাজেট কি শুধু দাম বাড়ানোর জন্য? কোন জিনিসের দাম তো কমতে দেখি না বাজারে-চাচার কিউরিয়াস মাইইন্ড ওয়ান্টস টু নো।
(চার পর্বের প্রথম পর্ব)
সহকারী অধ্যাপক
আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
ময়মনসিংহ।