Pakundia Pratidin
ঢাকাশনিবার , ২৮ নভেম্বর ২০২০
  1. আন্তর্জাতিক
  2. ইতিহাস
  3. ইসলাম ও জীবন
  4. কৃতি সন্তান
  5. জাতীয়
  6. জেলার সংবাদ
  7. তাজা খবর
  8. পাকুন্দিয়ার সংবাদ
  9. ফিচার
  10. রাজনীতি
  11. সাহিত্য ও সংস্কৃতি
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাকুন্দিয়ার এক তরুণ উদ্যোক্তার সাফল্যের গল্প

প্রতিবেদক
Nazmul
নভেম্বর ২৮, ২০২০ ৯:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো. স্বপন হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার

একজন সত্যিকার সফল উদ্যোক্তা তাঁর ব্যবসার উন্নয়নের পাশাপাশি নিজেকেও সব সময়ে উন্নত করার চেষ্টা করেন। সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় হিসেবে এর কোনো বিকল্প নেই।

সফল উদ্যোক্তা হতে পারা অবশ্যই দারুন, কিন্তু সেই পথে চ্যালেঞ্জও কম নয়। আর এই চ্যালেঞ্জ জয় করতে সব সময়ে নিজেকে উন্নত করার বিকল্প নেই। বেশিরভাগ সফল উদ্যোক্তা খুবই উ‌ৎসাহী ও আশাবাদী ধরনের মানুষ। সেই সাথে তাঁরা জানেন যে, ব্যবসার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি নিজের দক্ষতা ও জ্ঞানের উন্নতি করা কতটা দরকার।

পৃথিবীর সেরা উদ্যোক্তাদের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাঁরা সব সময়েই নিজেদের আপডেট করার জন্য নতুন নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা শেখার চেষ্টা করেন। প্রতিযোগিতায় টিঁকে থাকতে এবং ব্যবসাকে এগিয়ে নেয়ার এটাই সেরা উপায়। শুধু ব্যবসার পেছনে বিনিয়োগ করার বদলে যিনি ব্যবসাটি চালাচ্ছেন, তাঁর পেছনেও বিনিয়োগের দরকার আছে। উদ্যোক্তা নিজে যত উন্নত হবেন, তাঁর ব্যবসাও তত উন্নত হবে।

ঠিক এমনই একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার কথা বলছি। যিনি তার অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয়ে একটি ক্ষুদ্র “ফ্রেন্স ইনকিউবেটর এন্ড ইলেক্ট্রিক” অনলাইন নামের ব্যবসা ও ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছেন। মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করছেন। পাশাপাশি নিজের ব্যবসাকে নিয়ে যাচ্ছেন সফলতার দিকে।

“উত্তরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ” থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ও “বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়” থেকে ইন্টারমেডিয়েট সমাপ্তকারী মুহাম্মদ মুয়াজ হোসেন (২৭) এর কথা বলছিলাম।

পাকুন্দিয়া উপজেলার চরলক্ষীয়ার মাওলানা কামরুল হুদার পাঁচ মেয়ে দুই ছেলের মধ্যে তিনি ৬ষ্ঠ সন্তান। তিনি শিশুকালে নাযারানা করেন কিশোরগঞ্জ তারাপাশা কওমি মাদরাসা থেকে। হাতেখড়ি সহ দাখিল পাশ করেন পাকুন্দিয়ার ঐতিহ্যবাহী তারাকান্দি ফাযিল মাদরাসা থেকে। তারপরই ঢাকার উত্তরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারমেডিয়েট পড়ার পাশাপাশি সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সাড়ে চার বছর চাকুরী করেন ঢাকায়। সেখান থেকেই অনলাইন জগতের ব্যবসায় দিকে পা রাখা তার।

ইউটিউব দেখে অনুপ্রাণিত এই উদ্যোক্তা অনেক আগে থেকেই স্বপ্ন দেখে আসছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হবার। সেই লক্ষ্যেই কাজ শুরু। শুরুটা তার তেমন ফলপ্রসু ছিলো না। বহুবার বহু যাত্রায় ব্যর্থ হয়ে বর্তমানে তার নতুন প্রতিষ্ঠানটিকে প্রচন্ড পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতার দিকে নিয়ে এসেছেন। বর্তমানে তার ইউটিউবের মাধ্যমে এসএস অ্যাকাউন্টে ইউএস ডলার আসছে প্রতিনিয়ত।

কথা হচ্ছিলো তাঁর সাথে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মতো একটি দেশে ব্যবসা পরিচালনা করা যেমন সহজ তেমন প্রতিবন্ধকতাও অনেক। তবে দমে গেলেই হবে না। আমি নিজে বহুবার ব্যর্থ হয়েছি। এতে করে কি হয়েছে, আমি ভেঙ্গে পরিনি। মনোবল হারাইনি। বরং অদম্য শক্তি আর সাহস নিয়ে এগিয়েছি। নতুন নতুন চিন্তা করেছি। বিভিন্ন রকম মানুষের সাথে মিশেছি। জেনেছি কি করে কি করা যায়। আর বিভিন্ন সেমিনার এ যাওয়ার সুযোগ হতো না তবে ইউটিউবে দেখে নিতাম।

আমি স্বপ্ন দেখি মহাকাশ চুম্বী, যেনো অন্তত পক্ষে আকাশ পর্যন্ত হলেও পৌঁছুতে পারি। আমি বর্তমানে এই যে “ফ্রেন্স ইনকিউবেটর এন্ড ইলেক্ট্রিক” অনলাইন ব্যবসা ও ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছি এটা আমার জন্যে একটা পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সফলতা, ব্যর্থতা সবই আছে। আমি এরকম আরো পরীক্ষার সম্মুখীন হতে চাই।”

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমি শীতকালীন ভাপা ও চিতই পিঠা ব্যবসায় নেমেছি। কারণ, করোনার পাদুর্ভাবের কারণে আমার অনলাইন ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। কিন্তু আমি পিছপা হবার লোক নয়। তাই ঘরে বসে না থেকে যুগোপযোগী ব্যবসায় নেমেছি। এই ব্যবসায় নেমে নানা রকম শ্রেণি পেশার মানুষের মন্তব্য শুনেছি বা শুনছি। কিন্তু তাদের কথা কান না দিয়ে আমি অন্যান্য তরুণ সমাজকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিতেই মূলত আমার এই পেশায় আসা। কারণ, অনেক তরুণ আছে যারা চাকুরী পিছনে ছুটে জীবনটা শেষ করে ফেলছেন। আমি মনেকরি তারা যদি আমার মত যুগোপযোগী মননশীল চিন্তা চেতনা নিয়ে, পাছে লোকের কথা না শুনে নিজ উদ্যোগে কোনো একটা কাজে নেমে পরে তবে সফলতা আসবেই ইনশা আল্লাহ। আমার প্রতিদিন যা খরচ হয় তার দুই তৃতীয়াংশ লাভ হয়। এই ব্যবসায় এসে আমি অনেক লাভবান।

মুয়াজ তাঁর প্রতিষ্ঠানকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান। সফলতাকে বিভিন্ন ভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। তবে যার যার ক্ষেত্র থেকে সফলতাটা ভিন্ন। এই ভিন্ন মাত্রার সফলতার স্বাদ আস্বাদন করতেই নিরলস পরিশ্রম করে এগিয়ে যাচ্ছেন মুয়াজ এর মতো হাজারো তরুণ উদ্যোক্তা।